অর্ণব আইচ: বাংলাদেশি বিএনপি নেতার ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরির পর তার জাল ভোটার পরিচয়পত্র নষ্ট করে ফেলে দিল্লির দালালচক্র। এমনই ধারণা পুলিশের। বাংলাদেশের ওই বাসিন্দা তথা বিএনপি নেতা সেলিম মাতব্বর রবি শর্মা সাজতে রীতিমতো বাংলা থেকে হিন্দি পাঠের বই মুখস্থ করত। এই বইটিও সেলিমের কাছ থেকে পুলিশ উদ্ধার করে।
কিছুদিন আগেই পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সেলিম মাতব্বর নামে বাংলাদেশের মাদারিপুরের বাসিন্দা এক বিএনপি নেতা। তার কাছ থেকে একটি জাল আধার কার্ড ও ভুয়ো পাসপোর্ট উদ্ধার হয়। এ ছাড়াও তার কাছ থেকে বাংলাদেশ সরকারেরও একটি পরিচয়পত্রের নথি উদ্ধার হয়। সেলিম পুলিশের কাছে নিজেকে রবি শর্মা পরিচয় দিয়ে দাবি করে যে, সে দিল্লির মেন সার্কুলার রোনিয়া বিহারের বাসিন্দা। যদিও তার কাছ থেকে রবি শর্মার জাল পাসপোর্ট উদ্ধারের পর বিষয়টি ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। গত বছরের শেষে বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে আসা সেলিম হিন্দিও জানত না। তাই বাংলা থেকে হিন্দি ‘স্পিকিং কোর্স’-এর একটি বই দেখে সেলিম হিন্দি শিখতে শুরু করে। ওই বইটি উদ্ধারের পর সেলিম তার হিন্দি শিক্ষার ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্যও দেয় বলে পুলিশ জেনেছে।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, কোনও ভুয়ো আধারকার্ডের ভিত্তিতে শুধু পাসপোর্ট তৈরি হয় না। ভুয়ো পাসপোর্টের জন্য প্রয়োজন জাল ভোটার কার্ডের মতো পরিচয়পত্রও। যেহেতু জাল পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে তৈরি, তাই আরপিও বা পাসপোর্ট অফিস থেকে বানানো হলেও সেই পাসপোর্টকে জাল বলেই গণ্য করা হয়। পুলিশের মতে, সেলিম মাতব্বরের ভুয়ো পাসপোর্টের ক্ষেত্রেও ভুয়ো আধার কার্ডের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন হয় একটি ভোটার পরিচয়পত্রের। ফলে দিল্লির এক চক্র সেই ভুয়ো ভোটার পরিচয়পত্র যে পাসপোর্ট তৈরির জন্য ব্যবহার করেছিল, সেই ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত। কিন্তু পাসপোর্ট তৈরির পর পরই ভুয়ো চক্রের দালালরা সেই ভুয়ো ভোটার পরিচয়পত্রটি নষ্ট করে ফেলে বলে ধারণা পুলিশের। যদিও জেরার মুখে পুলিশকে সেলিম ভোটার পরিচয়পত্রের ব্যাপারে কোনও তথ্য জানায়নি। আবার পরে ওই ভুয়ো ভোটার পরিচয়পত্র অন্য কোনও জাল নথি তৈরির কাজেও তারা ব্যবহারের চেষ্টা করতে পারে। তবে দিল্লি থেকে পাসপোর্ট তৈরির আগে নদিয়ার হরিণঘাটা থেকেও একটি ভুয়ো আধারকার্ড তৈরি করে সেলিমের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। নদিয়ার ভুয়ো আধারকার্ডেও সেলিম মাতব্বরের নাম রবি শর্মা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।