গোবিন্দ রায়: মুর্শিদাবাদের বাবরি মসজিদ নির্মাণে কোনও বাধা নেই। মামলায় হস্তক্ষেপই করল না কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ। শনিবার শিলান্যাসের সময় অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে ঠিকই। তবে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার দায় রাজ্যের উপরেই ছাড়ল আদালত। যদিও ইতিমধ্যে বেলডাঙায় বাহিনী মোতায়েন করেছে রাজ্য সরকার।
মসজিদের জমি পরিদর্শনে হুমায়ুন কবীর
শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের শুনানির সময় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে। তাই রাজ্য প্রশাসনের তরফে মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। রাজ্যের তরফে অবশ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করা হয়। ইতিমধ্যে টহল দিয়েছে বাহিনী। কেন্দ্রের দাবি, ১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়েন রয়েছে।
বলে রাখা প্রয়োজন, আগামী ৬ ডিসেম্বর, শনিবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের ঘোষণা করেছেন হুমায়ুন কবীর। এজন্য তাঁর জমিও তৈরি। এহেন ঘোষণার পর থেকেই হুমায়ুনের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে থাকে শাসকদল তৃণমূল। এর মধ্যেই দলবিরোধী কাজের অভিযোগে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন ফিরহাদ হাকিম। জানান, হুমায়ুনের সঙ্গে কোনওরকম সম্পর্ক রাখবে না দল। এমনকী এই ইস্যুতে নাম না করে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বহরমপুরের সভা থেকে তিনি বলেন, “একটা ধান পচে গেলে সরিয়ে দিতে হয়। নাহলে বাকিগুলো পচে যায়। কিছু পোকামাকড় থাকবেই। তাদের সরিয়ে দিলে দেশ, রাজ্য চলবে, সব চলবে।” তিনি আরও বলেন, “কেউ কেউ টাকা খেয়ে ইলেকশনের আগে বিজেপির তাঁবেদারি করে। ওরা দেশের শত্রু। ওরা নির্বাচনের ২ মাস আগে থেকে এই সব রাজনীতি করে।”
এদিকে, এই ইস্যুতে মামলা গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। হুমায়ুন কবীরের প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী বলে অভিযোগ করে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। আইনজীবী সব্যসাচী চক্রবর্তী এই সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন। হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়মানুযায়ী মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। তবে শুক্রবারের শুনানিতে এই মামলায় হস্তক্ষেপই করল না ডিভিশন বেঞ্চ।
জোরকদমে চলছে মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের প্রস্তুতি
আদালতের নির্দেশের আগে থেকেই মসজিদের শিলান্যাসের শেষ প্রস্তুতিতে ব্যস্ত হুমায়ুন। এদিন সকালে মসজিদের জমি পরিদর্শন করেন। "মসজিদ হবেই", বলে হুঙ্কারও দেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড নেতা।
