গোবিন্দ রায়: করোনা কালে বেতন কম দিলেও পড়ুয়াদের মার্কশিট আটকাতে পারবে না রাজ্যের বেসরকারি স্কুল। পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হওয়া থেকেও আটকানো যাবে না ওই পড়ুয়াদের। বুধবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি একগুচ্ছ নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ জুন।
করোনা কালে বেসরকারি স্কুলে (Private Schools) ফি বৃদ্ধি করা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। লকডাউনে অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় অনেকেই স্কুলের ফি দিতে পারেননি। চলতি বছরের এপ্রিলের শুরু থেকে অফলাইনে স্কুলের ক্লাস শুরু হয়েছে। অভিযোগ, ফি বকেয়া থাকায় একাধিক পড়ুয়াকে স্কুলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এমনকী, আটকে দেওয়া হয়েছে তাদের মার্কশিট। পরীক্ষায় পাশ করলেও পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হতে দেওয়া হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ছুরি হাতে দৌড়, বাধা দিলেই এলোপাথাড়ি আঘাত যুবকের, কল্যাণী স্টেশনে রক্তারক্তি]
সেই মামলার শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ,”স্কুল হচ্ছে মন্দির। সেখানে যদি এরকম গন্ড হয় তাহলে কিছু বলার নেই। আদালতের পক্ষে কি সবসময় নজর রাখা সম্ভব? আপনি যদি খারাপ হাসপাতালে ভরতি হয়ে ভাল পরিষেবা আশা করেন আর আদালতকে নজর রাখতে বলেন, সেটা কীভাবে সম্ভব?” এর পরই একগুচ্ছ নির্দেশিকা দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
- ফি বকেয়া থাকলেও রাজ্যের ১৪৫টি বেসরকারি স্কুল কোনও পড়ুয়ার উত্তীর্ণ হওয়া বা তার মার্কশিট আটকাতে পারবে না।
- সমস্ত পড়ুয়াকে নতুন ক্লাসে যোগদান করতে দিতে হবে এবং তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।
- করোনা কালে কোন পড়ুয়া কত ফি দিয়েছেন তার হিসাব আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিকদের দিতে হবে।
- সব নথি খতিয়ে দেখে কোন পড়ুয়ার কত টাকা বকেয়া রয়েছে তা নির্ধারণ করবেন আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিক।
- আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিক যে বকেয়া ফি নির্ধারণ করবেন তা দিতে হবে অভিভাবকদের।
[আরও পড়ুন: ছুরি হাতে দৌড়, বাধা দিলেই এলোপাথাড়ি আঘাত যুবকের, কল্যাণী স্টেশনে রক্তারক্তি]
- যারা করোনা কালে কোনও ফি-ই দেননি তাদের নামও নথিবদ্ধ করবে আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিকরা।
- অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধির বিষয়টিও খতিয়ে দেখবেন আদালত নিযুক্ত বিশেষ আধিকারিকরা।
- অভিভাবকরা নতুন সেশনে কোনও ছাড় ছাড়াই বেতন দেবেন।
- করোনা কালের হিসেব অনুযায়ী যে বেতন দিয়েছেন তার স্টেটমেন্ট রাখতে হবে অভিভাবকদের। শেষ টাকা দেওয়ার প্রমাণ রাখতে হবে।
প্রসঙ্গত, ২৫ মার্চ আদালত স্পেশ্যাল অফিসার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। কোনও বিবাদ হলে দু’সপ্তাহের মধ্যে দেখবেন স্পেশ্যাল অফিসার।