গোবিন্দ রায়: অস্বস্তি বাড়ল রাজগঞ্জের 'বিতর্কিত' বিডিও প্রশান্ত বর্মনের। দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে তাঁর আগাম জামিন খারিজ করল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। শুধু তাই নয়, আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে বিধাননগর আদালতে প্রশান্ত বর্মনকে আত্মসমর্পণ করতে হবে বলেও নির্দেশ জানিয়েছেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। পাশাপাশি নিম্ন আদালতের আগাম জামিনের নির্দেশেরও সমালোচনা করে এদিন কলকাতা হাই কোর্ট। শুনানিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, খুনের মতো ঘটনায় জামিন বা আগাম জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতকে অভিযুক্তের যে যে বিষয়গুলি দেখতে হয়, তার কোনোটাই দেখা হয়নি। তিনি বাস্তব গুরুতর এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রমাণ অস্বীকার করে জামিন দিয়েছেন। আর সেই কারণেই জামিন খারিজের নির্দেশ বলেও এদিন কড়া পর্যবেক্ষণ আদালতের।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা খুনে তাঁর পরিবার বিডিও প্রশান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে ঘটনায় বিডিও যে যুক্ত, সেই সংক্রান্ত একাধিক তথ্য পুলিশের হাতে আসে। বিডিও ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু রাজগঞ্জের 'বিতর্কিত' বিডিও প্রশান্ত বর্মনের নাগাল পেতে হিমশিম খেতে হয় কার্যত তদন্তকারীদের। এরমধ্যেই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বারাসত আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন প্রশান্ত বর্মন। নিম্ন আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে। পরে বিধানগর মহকুমা আদালতে হাজিরা দিয়ে তা কার্যকর করেন তিনি। এই ঘটনায় পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন হয়।
এরপরেই নিম্ন আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় রাজ্য। যেখানে অভিযুক্ত প্রশান্ত বর্মনের আগাম জামিনের নির্দেশ খারিজ করার আবেদন জানানো হয়। এই মামলার শুনানিতে এর আগে নিম্ন আদালতের নির্দেশের তীব্র সমালোচনা করে হাই কোর্ট। শুধু তাই নয়, আজ সোমবারও ফের এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। শুনানি শেষে দত্তাবাদে স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনে বিডিও প্রশান্ত বর্মনের আগাম জামিনের নির্দেশ খারিজ করে। শুধু তাই নয়, আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে বিধাননগর আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে বলেও নির্দেশে জানায় হাই কোর্ট।
নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যা আদতে পশ্চিম মেদিনীপুরের নীলদা পোস্টঅফিস এলাকার দিলামাটিয়ার বাসিন্দা। দত্তাবাদে সোনার গয়নার দোকান রয়েছে তাঁর। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, গত ২৮ অক্টোবর দোকান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। বিধাননগর দক্ষিণ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তারপরই নিউটাউনের যাত্রাগাছির বাগজোলা খালপাড় এলাকার ঝোপ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। পরিবার দেহ শনাক্ত করে। পরিবারের দাবি, অপহরণ করে খুন করা হয় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে।
