অর্ণব আইচ: তিন জেলায় সক্রিয় জাল পাসপোর্ট চক্র। অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের জন্য জাল পাসপোর্ট তৈরিতে ফের ডাকবিভাগের এক অস্থায়ী কর্মীর সন্ধান পেলেন কলকাতা পুলিশের সিকিউরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন বা এসসিও-র গোয়েন্দারা। এখনও পর্যন্ত জাল পাসপোর্ট কাণ্ডে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে।
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, উত্তর ২৪ পরগনার পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের অস্থায়ী কর্মী তারকনাথ সেনের হাত ধরে তৈরি হয়েছে দু’শোরও বেশি জাল পাসপোর্ট। তবে আপাতত ৭৩টি জাল পাসপোর্ট সম্পর্কে তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবার জাল পাসপোর্টের ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘জাল পাসপোর্ট, জাল আধার, জাল ভোটার কার্ড এসবের ব্যাপারে কেন্দ্র আরও নজরদারি বাড়াক। পুলিশ সতর্ক হয়ে দেখুক। বাম আমল থেকেই এই সমস্যা। রাজ্য পুলিশ সীমান্ত পাহারা দেয় না।’’
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, চক্রের মূল মাথা সমরেশ বিশ্বাস ও তাঁর ছেলে রিপন বিশ্বাসের সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও নদিয়ার জাল পাসপোর্ট চক্রের সরাসরি যোগাযোগ ছিল। চক্রের এজেন্ট ও সাব এজেন্টরা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। সমরেশ ও রিপনের নজরে ছিল এই জেলাগুলির পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র ও ডাকঘরগুলি। এই কেন্দ্র ও ডাক বিভাগের কয়েকজন অস্থায়ী কর্মীকেই সমরেশরা নিজেদের চক্রে ভিড়িয়ে নেয়। যদিও এবার গোয়েন্দাদের নজর বারাসত ও সীমান্তবর্তী এলাকার এমন কয়েকজনের দিকে, যারা ভুয়া আধার ও ভোটার কার্ড তৈরি করাত।
পাসপোর্টের ঠিকানা অনুযায়ী ভুয়ো ঠিকানায় সেগুলি পৌঁছনোর আগেই চক্রে থাকা অস্থায়ী ডাক বিভাগের কর্মীরা সেগুলি সমরেশ ও রিপনের হাতে পৌঁছে দিত। ক্রমে ওই জাল পাসপোর্ট পৌঁছে যেত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের হাতে। একেকটি পাসপোর্ট পিছু ডাক বিভাগের অস্থায়ী কর্মীদের পাঁচ থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হত। এবার উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের এক ডাক বিভাগের অস্থায়ী কর্মীর উপর নজর পুলিশের। এছাড়াও এই চক্রের আরও কয়েকজনের সন্ধানে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।