নিরুফা খাতুন: রঙের উৎসব, আনন্দের উৎসব। রঙিন হয়ে ওঠাই এই উৎসবের মূল সুর। কিন্তু সেই রঙিন হওয়ার ইচ্ছায় বাধা পড়লে মন এত বিষণ্ণতায় ভরে ওঠে যে জীবনটাই শেষ করে দিতে ইচ্ছে করে! শুনে আশ্চর্য মনে হলেও ঘটনা ঘটেছে ঠিক তেমনই। হোলিতে মেহেন্দি পরতে চেয়েছিলেন বাড়ির বউ। 'রক্ষণশীল' পরিবারের শাশুড়ি তাতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। মেহেন্দি পরতে না পেরে অভিমানে গৃহবধূ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ। খাস কলকাতার টালা থানা এলাকার ঘটনায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম পিঙ্কি কুমারী, বয়স ২৬ বছর। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে টালা থানার পুলিশ।

টালার আনন্দনাথ দেব লেনের চৌধুরী পরিবার। এখানেই বছর খানেক আগে বিয়ে হয়েছিল পিঙ্কি কুমারী নামে বছর ছাব্বিশের তরুণীর। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির নানা নিয়মের বেড়াজালে নববধূ অতিষ্ঠ হয়ে উঠছিলেন বলে প্রতিবেশীদের দাবি। আরও অভিযোগ, প্রায়শয়ই পিঙ্কির বিভিন্ন কাজে আপত্তি তুলতেন শাশুড়ি। তা নিয়ে তাঁদের মধ্যে অশান্তিও হতো। এমনকী স্বামী রোহিতকেও এসব সময় পাশে পাননি পিঙ্কি। ফলে পারিবারিক অশান্তি ছিলই।
এই আবহেই দোল-হোলির আগে পিঙ্কি হাতে মেহেন্দি পরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শাশুড়ি আপত্তি করেন। রক্ষণশীল পরিবার মেহেন্দি পরা পছন্দ করেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন শাশুড়ি। মেহেন্দি পরতে না পেরে অভিমানে কার্যত ভেঙে পড়েন পিঙ্কি। আর তারপরই চরম সিদ্ধান্ত নেন তিনি। হোলির সকালে ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, বিছানার চাদর দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পিঙ্কির দেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, পিঙ্কি আত্মহত্যা করেছেন। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রঙের উৎসবে এই ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে।