কৃষ্ণকুমার দাস: কলকাতায় ক্রমবর্ধমান করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমানোর লক্ষ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমিত এলাকায় অ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়াতে শুরু করল পুরসভা। বিশেষ করে করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিজন ও প্রতিবেশীদের নিয়ম করে ওই ওষুধ খাইয়ে আসছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। বেলগাছিয়া, নারকেলডাঙা, বেনিয়াপুকুর বসতিতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট এবং জানবাজার ও ঢাকুরিয়ায় ‘আর্সেনিকাম অ্যালবাম’ এক ফোঁটা করে দেওয়া হচ্ছে।
করোনা প্রতিরোধে মানুষের শরীরে ‘ইমিউনিটি’ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে দু’রকমের ওষুধ সংক্রমিত পল্লিতে (কনটেনমেন্ট জোন) খাওয়ানোর কথা শনিবার স্বীকার করেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বলেন, “যাঁদের হার্ট ও কিডনির অসুখ আছে, ডায়াবেটিস এবং চোখে গ্লুকোমা জাতীয় অসুস্থতা তাঁদের হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। অন্য যাঁরা আক্রান্ত হতে পারেন তাঁদের ডোজ মেনে নিয়ম বেঁধে অ্যালোপ্যাথির হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হচ্ছে।” কলকাতার ২৬৪ টি কনটেনমেন্ট জোনেই করোনার নতুন সংক্রমণ আটকাতে লকডাউন নিয়ম আরও কড়াকড়ির পাশাপাশি এই ওষুধ মানুষকে খাওয়ানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: বিতর্ককে হারিয়ে নজির বাঙ্গুর হাসপাতালের, সাত দিনে সুস্থ হলেন প্রায় ২০০ করোনা রোগী]
কলকাতা নিয়ে স্বাস্থ্যভবনের তথ্য, বেলগাছিয়া, নারকেলডাঙা, জানবাজার, তালতলা থেকে নতুন করোনা রোগী আসার সংখ্যা গত কয়েকদিনে অনেকটা কমেছে। এখানেই শেষ নয়, বেলগাছিয়া বসতিতে সংক্রমণ রুখতে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড স্প্রে করা হয়েছে। ওই স্প্রে বাতাসে দীর্ঘদিন ভেসে ভাইরাস ও জীবাণুকে ধ্বংস করছে। পুরসভার তথ্য, বসতির যে সমস্ত গলি ও লেনে এই স্প্রে ছড়ানো হয়েছিল সেখানে নতুন করে কেউ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হননি। মেয়র বলছেন, “যে কোনও মূল্যে করোনা রুখতে বিশেষজ্ঞদের সমস্ত পরামর্শ আমরা নাগরিক স্বার্থে ব্যবহার করছি। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা যাঁদের ওষুধ খাওয়াচ্ছেন তাঁদের নাম-ঠিকানা ও ডোজ দেওয়ার দিনও ডায়েরিতে লিখে রাখছেন। করোনা নিয়ে পুরসভার নিজস্ব মাইক্রোপ্ল্যানিং জোনে পরবর্তী ওষুধ খাওয়ানোর দিনে গিয়ে ওই স্বাস্থ্যকর্মীরাই দিয়ে আসছেন। পুরোটাই পুরসভার খরচে, স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিশ্রমে পরিকল্পনা করে।”
[আরও পড়ুন: ২ সপ্তাহ পর খুলল হাওড়া হাসপাতাল, কাজে যোগ দিলেন করোনা জয়ী সুপার]
মেয়রের পরামর্শেই প্রায় দুই সপ্তাহ আগে উত্তর কলকাতার বেলগাছিয়া বসতিতে প্রথম হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট খাওয়ানো শুরু হয়। হার্ট ও ডায়াবেটিকস রোগীদের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ওষুধ হিসাবে হোমিও বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে আর্সেনিকাম অ্যালবাম খাওয়াতে নির্দেশ দেন মেয়র। সল্টলেকের এক হোমিও চিকিৎসককে তিনি শহরের বেশ কিছু হটস্পটেও পাঠিয়ে বসতি ও ঘিঁঞ্জি এলাকার বাসিন্দাদের ওষুধ খাইয়েছেন। শহরের অনেক বিশিষ্ট নাগরিকও নিজে থেকেই হোমিও ‘আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০’ সপরিবারে খেতে শুরু করেছেন। এদিন মহানাগরিক ফিরহাদ বলেন, “বাইরের পাড়ার লোকেদের যেমন নিজের পাড়ায় ঢোকা বন্ধ করতে হবে। তেমনই নিজেদের অন্য পাড়ায় যাওয়া বন্ধ করতে হবে। তবেই করোনার সংক্রমণ বন্ধ হবে। আর এভাবে গোটা কলকাতাবাসী এগিয়ে এলে তবেই রেড জোন থেকে ধীরে ধীরে গ্রিন জোন হবে।”
The post কনটেনমেন্ট জোনে সংক্রমণ রুখতে হোমিও, অ্যালোপ্যাথি ওষুধ খাওয়াচ্ছে পুরসভা appeared first on Sangbad Pratidin.
