অর্ণব আইচ: মালবাহী গাড়ির চাবি কেড়ে নিয়ে চাঁদার জুলুমের অভিযোগ। বাধা দিতে গিয়ে মধ্য কলকাতার নিউ মার্কেট (New Market) এলাকার একটি কালীপুজো কমিটির সদস্যদের হাতে আক্রান্ত হল পুলিশ। এমনকী, ওই পুজো কমিটির কিছু সদস্য নিউ মার্কেট থানায় গিয়ে চড়াও হয়, এমনও অভিযোগ উঠেছে। উন্মত্ত জনতার হামলায় নিউ মার্কেট থানার অতিরিক্ত ওসি-সহ (OC) পাঁচজন আহত হন। এই ঘটনায় নজনের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করে। এর মধ্যে উত্তম সাহা, শিবম সিং ও মণীশ সিং নামে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতরা মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতে নিউ মার্কেট এলাকায় রানি রাসমনি রোডে ঘটেছে এই ঘটনাটি। এখানেই একটি কালীপুজোর (Kali Puja) আয়োজন করা হয়। অভিযোগ, একটি মালবাহী গাড়ি ওই অঞ্চল দিয়ে যাওয়ার সময় কালীপুজো কমিটির সদস্যরা গাড়িটিকে আটকায়। মুরগি বহনকারী মালবাহী গাড়ির চালককে প্রথমে ৫ হাজার টাকা চাঁদা দেওয়া হয়। পরে দরাদরি করে তা হাজার টাকায় নামলেও চালক তা দিতে রাজি হননি। এর পরই ওই চালকের সঙ্গে কয়েকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়। তাঁর গাড়ির চাবি কেড়ে নেওয়া হয়। গোলমালের খবর পেয়ে নিউ মার্কেট থানার কয়েকজন পুলিশকর্মী ঘটনাস্থলে যান। গোলমাল থামাতে গেলে ওই পুজো কমিটির কয়েকজন মদ্যপ সদস্য পুলিশকর্মীদের মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থল থেকে তিন যুবককে ধরে পুলিশ নিউ মার্কেট থানায় নিয়ে যায়। তাঁদের ছাড়াতে নিউ মার্কেট থানায় যায় কমিটির সদস্যরা।
[আরও পড়ুন: কেষ্টহীন বীরভূম! তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানো হল ‘দাপুটে’ অনুব্রতকে]
থানার ভিতর প্রথমে পুলিশের সঙ্গে তাদের বচসা হয়। এর পর থানার মধ্যেই পুলিশ আধিকারিক ও পুলিশকর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, হামলায় নিউ মার্কেট থানার অতিরিক্ত ওসি, একজন সাব ইন্সপেক্টর, দু’জন কনস্টেবল ও একজন হোমগার্ড আহত হন। আহতদের মধ্যে এক মহিলা পুলিশকর্মীও রয়েছেন। রাতেই তাঁদের এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।
যদিও ওই পুজো কমিটির দাবি, এলাকার এক বালককে গাড়িটি ধাক্কা দেয়। এর পরই কমিটির সদস্যদের সঙ্গে চালকের বচসা বাঁধে। যদিও পুলিশের দাবি, ওই চালকের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া গাড়ির চাবি উদ্ধার করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের পালটা দাবি, থানায় কথা বলতে গেলে মহিলা পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে পুলিশই ধাক্কাধাক্কি করে। পুলিশের অভিযোগ, শুধু হাত দিয়ে মারধর নয়, লাঠি দিয়েও পুলিশকর্মীদের মারধর করা হয়। তাই তাঁদের আহত অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে তোলাবাজির চেষ্টার মামলা করা হয়। এ ছাড়াও সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশকে মারধরের জন্যও মামলা হয়।
[আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ‘গড়ে’ বদল তৃণমূলে! তমলুকের জেলা সভাপতি পদ থেকে কেন বাদ সৌমেন?]
সোমবার ধৃত তিনজনকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তোলাবাজির চেষ্টার মামলায় তিন অভিযুক্তকে বিচারক জামিন দেন। তবে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে তিনজনকেই এক দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। বাকি ৬ অভিযুক্তর সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।