shono
Advertisement

অন্ধত্ব রুখতে ও ছানি কাটায় জেলা ভিত্তিক টার্গেট স্বাস্থ্য ভবনের, জোর মরণোত্তর চক্ষুদানেও

চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যজুড়ে অন্তত ৭.২৫ লক্ষ ছানি অপারেশন করতে হবে, নির্দেশ স্বাস্থ্যভবনের।
Posted: 01:53 PM May 20, 2023Updated: 04:59 PM May 20, 2023

স্টাফ রিপোর্টার: ছানি অপারেশনে সার্বিকভাবে দেশের মধ্যে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু পিছিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলি। সম্প্রতি এই তথ্য উঠে এসেছে স্বাস্থ্য দপ্তরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে। বিষয়টি মোটেই ভালভাবে নেয়নি স্বাস্থ্য ভবন। তাই অন্ধত্ব নিবারণ ও ছানি কাটার জেলাওয়ারি টার্গেট ঠিক করে দেওয়া হল। অন্ধত্ব নিবারণে মরণোত্তর চক্ষুদানকে আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।

Advertisement

‘চোখের আলো’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) স্বপ্নের প্রকল্প। কিন্তু গত বছর এই প্রকল্পে অনেকগুলি জেলার পারফরম্যান্সই সন্তোষজনক ছিল না। কোথাও ৫০ শতাংশ তো কোথাও আবার ২০ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করতে পারেনি অন্তত ৬ থেকে ৮টি জেলা। বৃহস্পতিবার জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে ছানি অপারেশনের পাশাপাশি চোখের পাওয়ার ঠিক করা ও নিখরচায় চশমা দেওয়ার খুঁটিনাটি প্রসঙ্গেও লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে প্রতিটি জেলার। স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, চোখের আলো-তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ছানি অপারেশন ও চশমা বিলির ক্ষেত্রে।

[আরও পড়ুন: হাই মাদ্রাসার ছাত্রীদের টেক্কা ছাত্রদের, আর্থিক সংকট কাটিয়ে প্রথম দরিদ্র পরিবারের সন্তান]

স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ, চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যজুড়ে অন্তত ৭.২৫ লক্ষ ছানি অপারেশন করতে হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনাকে (৩৭ হাজার)। তার পরেই রয়েছে মুর্শিদাবাদ (৩৪ হাজার) ও নদিয়া (২৫ হাজার)। স্কুলপড়ুয়া এবং ৪৫-ঊর্ধ্বদের জন্য যথাক্রমে ১.২৫ লক্ষ ও ৭.৭০ লক্ষ চশমা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে সারা রাজ্যে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টার্গেট দেওয়া হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনাকেই। ৬-১৮ বছর বয়সিদের জন্য ১০ হাজার এবং ৪৫-ঊর্ধ্বদের জন্য ৯৫ হাজার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট ১৫টি আই ব্যাংককে অন্তত ৫ হাজার মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহ ও ৩৫০০ কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করতে হবে। এর মধ্যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধীন রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি (RIO) এবং বারাকপুরের বেসরকারি হাসপাতাল প্রভা আই ব্যাঙ্ক তথা দিশা আই হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বেশি টার্গেট। দুই প্রতিষ্ঠানকেই ৮০০ করে কর্নিয়া সংগ্রহ করতে হবে। আর প্রতিস্থাপন করতে হবে আরআইও এবং দিশাকে যথাক্রমে ৫৬০ ও ৫০০টি করে। প্রতিস্থাপনের দায় রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি ২৭টি হাসপাতালের।

[আরও পড়ুন: এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃত্যুমিছিল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১]

স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য চোখের নির্দিষ্ট কোনও রোগ নির্ণয় এবং তার যথাযথ চিকিৎসা কিংবা পুনর্বাসনের ফারাক বা ব্যবধান, সেটাও কমানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে জেলা ধরে ধরে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছানি চিহ্নিতকরণ ও অপারেশনের মধ্যে গত বছর ১৯ শতাংশ ব্যবধান ছিল। সেই ব্যবধান চলতি অর্থবর্ষে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ১৫ শতাংশ এবং ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০ শতাংশ বা তার কমে নামাতে হবে। স্কুলপড়ুয়াদের চোখের পাওয়ার নির্ণয় ও চশমা প্রদানের মধ্যেও গত বছর যে ২৪ শতাংশ ব্যবধান ছিল, সেটিকে জুলাই ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে যথাক্রমে ১৮ ও ১০ শতাংশের বা তার কম করতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘শুধু লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া এবং ব্যবধান কমানোর উপরেই জোর দেওয়া হয়নি। পরিকাঠামো সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও টার্গেট ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে একটি করে আই ব্যাঙ্ক চালু করতে হবে। রাজ্যের সব নির্মীয়মাণ চক্ষু অস্ত্রোপচার ওটি-কে প্রথম পর্যায়ে জুন ও দ্বিতীয় পর্যায়ে আগস্টের মধ্যে চালু করে দিতে হবে। এবং সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজকে মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement