সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পঞ্চায়েত ভোট বেলাগাম সন্ত্রাসের অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (CM Mamata Banerjee) খোলা চিঠি দিলেন রাজ্যের বিশিষ্টজনদের একাংশ। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে গত ৮ জুন থেকে ১৪ জুলাইয়ের মধ্যে ৫২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ভোট ঘিরে হত্যালীলা, অরাজকতার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে দায়ী করেছেন অপর্ণা সেন, কৌশিক সেনের, অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্টজনেরা। হিংসা রুখতে অবিলম্বে রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।
মনোনয়ন থেকে নির্বাচন পেরিয়ে ভোট গণনা। পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রক্তাক্ত হয়েছে বাংলার মাটি। একাধিক নির্বাচনী কেন্দ্রে মুহূর্মুহু বোমাবাজি হয়েছে, গুলি চলেছে। সংবাদমাধ্যমগুলিতে প্রকাশ্যে এসেছে আগ্নেয়াস্ত্রধারী দুষ্কৃতীদের ছবি। এই অশান্তিতে বিরোধীদের পাশাপাশি শাসক দলের কর্মীদেরও মৃত্যু হয়েছে। ভোটহিংসার এই চেহারা নিয়ে সরব হয়েছে সব পক্ষই। বিশিষ্টজনদের একাংশের চিঠিতে রাজ্য প্রশাসন তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এর জন্য দায়ী করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: এবার কি আদালতকে নির্বাচন করাতে হবে? পঞ্চায়েত ভোট মামলায় কমিশনকে ভর্ৎসনা হাই কোর্টের]
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভোটপর্বের ৩৭ দিনে ৫২ জন প্রাণ হারিয়েছেন, তেমন অনেকেই নিখোঁজ। “আপনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব অস্বীকার না করেও এই কথা অবশ্যই বলা যায় যে এই পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রীক হত্যালীলা এবং অরাজকতার দায়িত্ব মূলত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এবং আপনার। ” চিঠির শেষে লেখা হয়, আমরা দাবি করছি, “অবিলম্বে এই রক্তস্নাত পশ্চিমবঙ্গে নিরপেক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গবাসীর প্রাণ, জীবিকা ও সম্পত্তির রক্ষার দায়িত্ব নিতে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার উদ্যোগী হোক।” মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা খোলা চিঠিতে ৩০ জন বিশিষ্টজনের নাম রয়েছে। তারা হলেন অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টাচার্য, অপর্ণা সেন, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, পল্লব কীর্তনীয়া প্রমুখ।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে পারে বিজেপি, মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী]
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের হিংসায় মৃত্যু নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যও ঘোষণা করেন। এই বিষয়ে মমতা বলেন, “ভোট হিংসায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের সকলের পরিবারের জন্য দুঃখিত। আমি সমব্যথী। পুলিশকে ফ্রিহ্যান্ড দিচ্ছি। উপযুক্ত পদক্ষেপ নিন। আমরা ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করছি। আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি কোনও ভেদাভেদ হবে না।”
