অর্ণব আইচ: কম্পিউটার, ল্যাপটপকে মসৃণভাবে চালাতে অ্যান্টি ভাইরাস ইনস্টল করার টোপ। সেই সুযোগে মেশিন হ্যাক করে যাবতীয় তথ্য চুরি এবং সবশেষে ডলারের বিনিময়ে গিফট কুপন দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে আনা। কার্যত এমনই হাই-টেক উপায়ে খাস কলকাতায় ভুয়ো কলসেন্টার খুলে চলছিল দেদার প্রতারণা। একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে গোপন সূত্রে ভুয়ো কলসেন্টার খবর পান লালবাজারের গোয়েন্দারা। গুন্ডাদমন শাখা অভিযান চালায় বালিগঞ্জ এলাকায়। আর তাতেই ধরা পড়েন ১৯ জন। একটি ফ্ল্যাটে বসে এসব বেআইনি কাজকর্ম চলছিল। সেখান থেকে প্রচুর মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উদ্ধারের পর ফ্ল্যাটটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ। এই চক্রের নেপথ্যে মাস্টারমাইন্ড কে, তা জানতে মরিয়া তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বালিগঞ্জের মুলেন রোডে একটি ফ্ল্যাটে বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিল এই বেআইনি কলসেন্টার। কীভাবে চলত প্রতারণা চক্র? তাও জানিয়েছে পুলিশ। নরটন অ্যান্টি ভাইরাস ইনস্টল করার প্রলোভন দেখানো হত প্রযুক্তির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ক্রেতাদের। চক্রের মূল টার্গেট ছিলেন মার্কিন নাগরিকরা। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে সফটওয়্যার ইনস্টল করার নামে মেশিন হ্যাক করে তথ্য চুরি। তার পর ক্রেতাদের শতাধিক ডলারের গিফট কুপন কিনতে বাধ্য করা হতো। সেই অর্থ যেত চক্রের মূল পান্ডার অ্যাকাউন্টে। এভাবেই নিজেদের ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বাড়িয়ে চলছিল প্রতারকরা।
আর্থিক প্রতারণার একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগ। বালিগঞ্জে এই ভুয়ো কলসেন্টারের হদিশ জানতে পারে পুলিশ। সোমবার রাতে গুন্ডাদমন শাখার আধিকারিকরা সেখানে অভিযান চালিয়ে মোট ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। সকলে একসঙ্গে থেকে এখান থেকে চালাত বেআইনি কলসেন্টার। ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় রাউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল। সেসব বাজেয়াপ্ত করে ফ্ল্যাটটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই প্রতারণা চক্রের মাথা কে, তার খোঁজে নেমেছেন তদন্তকারীরা।