অর্ণব আইচ: প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের মামলায় আজ, মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিচারপর্ব। বিচারভবনের ইডির বিশেষ আদালতেরক রুদ্ধদ্বার কক্ষে এদিন সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। এছাড়া ২০ জানুয়ারি ও ২৭ জানুয়ারি আরও দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করবে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই শুরু হয়েছে ইডির প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বিচারপর্ব। এর আগে সুপ্রিম কোর্টে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী। ওই জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ইডি দাবি করেছিল যে, অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় জামিন পেয়ে বাইরে বের হলে কয়েকজন সাক্ষীর প্রাণসংশয় হতে পারে। তখন সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, বিচারপর্ব শুরু করে জানুয়ারির মধ্যেই ওই সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করতে হবে। ইডির পক্ষ থেকে বিচারভবনে ইডির বিশেষ আদালতে তিনজন সাক্ষীর তালিকা জমা দেওয়া হয়। বিচারক নির্দেশ দেন, ১৪ জানুয়ারি, ২০ জানুয়ারি ও ২৭ জানুয়ারি রুদ্ধদ্বার কক্ষে তিন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে। সেইমতো, মঙ্গলবার একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করবে আদালত।
এর আগে সল্টলেক সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দপ্তরে গিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নিজের বক্তব্য জানিয়েছিলেন পেশায় ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তি। তাঁর নাম এই মামলার চার্জশিটে সাক্ষীর তালিকায় যুক্ত হয়। একইভাবে মঙ্গলবার অন্য দুই সাক্ষীরও রুদ্ধদ্বার কক্ষে এক সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করবে বিচারভবনের ইডির বিশেষ আদালত। এছাড়াও ২০ জানুয়ারি ও ২৭ জানুয়ারি আরও দু'জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করবে আদালত। এর আগে তাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করেছিল ইডি। তাঁদের নামও রয়েছে চার্জশিটে সাক্ষীর তালিকায়। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার প্রথম দফায় ওই সাক্ষী তাঁর নিজের বক্তব্য আদালতের কাছে জানাবেন। পরের দফায় অভিযুক্তর আইনজীবীরা তাঁকে 'ক্রস' করতে পারেন। এদিন মামলার অভিযুক্তদের আদালতে হাজিরা দিতে হবে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইডির প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্তর সংখ্যা মোট ৫৪। এর মধ্যে ২৮টি বেসরকারি সংস্থা। এই ৫৪ জনের বিরুদ্ধেই ইডি চার্জশিট পেশ করেছে। তিনদিন ধরে এই ৫৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। এর মধ্যে প্রথম দিন এই মামলার প্রথম অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও জেলবন্দি অন্য অভিযুক্ত অয়ন শীল, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। বন্দি অবস্থায় অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে বেসরকারি হাসপাতাল থেকেই ভারচুয়াল পদ্ধতিতে পেশ করা হয়।
এছাড়াও ওই একইদিনে প্রাথমিক পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধেও চার্জ গঠন হয় আদালতে। দ্বিতীয় দিনে এই মামলায় অভিযুক্ত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়, তাপস মণ্ডল, মানিকের স্ত্রী শতরূপা ভট্টাচার্য, ছেলে শৌভিক ভট্টাচার্য, কুন্তল ঘোষ-সহ ৪৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে আদালত। তৃতীয় দিনে শুধু একজন অসুস্থ অভিযুক্ত, যিনি ভিনরাজ্যে ছিলেন, তাঁকে ইডির বিশেষ আদালতে সশরীরে হাজির করিয়ে চার্জ গঠন করা হয়। চার্জ গঠনের শেষেই বিচারক মঙ্গলবার থেকে বিচারপর্বের নির্দেশ দেন।