অভিরূপ দাস: ডিগ্রি ভাঁড়িয়ে চিকিৎসা করে আরও ফ্যাসাদে আর জি কর আন্দোলনের মুখ ডা. আসফাকুল্লা নাইয়া। এবার ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফ থেকে শোকজের চিঠি ধরানো হল তাঁকে। এই চিঠি পাওয়ার সাতদিনের মধ্যে ডা. আসফাকুল্লাকে ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিলে হাজির হতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের তরফে অভিযোগ করা হয় আসফাকুল্লার বিরুদ্ধে। কী সেই অভিযোগ? ‘এমএস’ না হয়েও নামের পাশে ভুয়ো ডিগ্রি বসিয়ে রোগী দেখেছেন তিনি। তদন্ত চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি দিয়েছিল জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন। রীতিমতো প্রমাণ দিয়ে জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন দেখায়, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে পঠনপাঠন চলাকালীন কীভাবে হুগলির কিউরেন্টার হেলথকেয়ার নামে একটি বেসরকারি হেলথ সেন্টারে চুটিয়ে প্র্যাকটিস করছেন ডা. আসফাকুল্লা নাইয়া। ২০২২ সালে ওই হেলথ সেন্টারের চিকিৎসক তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ডা. নাইয়ার নাম। তলায় লেখা নাক-গান-গলা বিশেষজ্ঞ। এমবিবিএস (ক্যাল)-এমএস (ইএনটি)।
জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, ২০২২ সালে আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি হিসেবে যোগদান করেন আসফাকুল্লা। অ্যাসোসিয়েশনের প্রশ্ন, ইএনটি-র প্রথম বর্ষের ট্রেনি কোন আইনে নিজেকে স্পেশালিস্ট লিখে ডাক্তারি শুরু করলেন? এছাড়াও ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্সের নিয়ম অনুযায়ী কোনও পিজিটি বেসরকারি নার্সিংহোমে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে এই ঘটনা চূড়ান্ত আইন লঙ্ঘন। এই তথ্য সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল।
মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের আইন (এটিকুয়েট অ্যান্ড এথিকস রেগুলেশনস ২০০২) অনুযায়ী কোনও বিশেষ শাখায় পড়াশোনারত অবস্থায় নিজেকে ওই শাখার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলে প্র্যাকটিস করা গুরুতর অন্যায়। এমনই অভিযোগ উঠেছে ডা. আসফাকুল্লা নাইয়ার বিরুদ্ধে। সমস্ত নথি নিয়ে মেডিক্যাল কাউন্সিলে আসতে বলা হয়েছে ওই চিকিৎসককে। অভিযোগ সত্যি প্রমাণ হলে যথাযোগ্য শাস্তি হবে।
এদিকে নোটিশ পেয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ডা. আসফাকুল্লা নাইয়া। একাধিকবার ফোন করা হলেও ফোন তোলেননি তিনি। ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের তরফে এদিন জানানো হয়েছে, "ডা. আসফাকুল্লা নাইয়া অনৈতিকভাবে প্র্যাকটিস করছিলেন। আমরা মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে এই বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। কাউন্সিলকে বলব, দ্রুত শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ডা. আসফাকুল্লা নাইয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।"