ফারুক আলম, বিধাননগর: যুবভারতীতে (Yuva Bharati Chaos ) মেসির আগমন ঘিরে শনিবার চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। মেসির দর্শন না পাওয়ায় স্টেডিয়ামে ভাঙচুর হয়। আঙুল উঠছে আয়োজকদের দিকে। গোটা ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়ের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সকালে যুবভারতীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যায় তদন্ত কমিটি। পরে তদন্তের গতিপ্রকৃতি ও ক্ষতিপূরণ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়।
হাজার হাজার টাকার টিকিট কেটেও লিওনেল মেসিকে দেখা যায়নি। এই অভিযোগে যুবভারতীতে ভাঙচুর করে দর্শকরা। তার আগে মেসিও স্টেডিয়াম ছাড়েন। তবে ক্ষোভের রেশ কমেনি। সোশাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত মেসি ও দর্শকদের কাছে ক্ষমা চান। আয়োজকদের দিকে তোপ দেগে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। যার প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম কুমার রায়। রবিবার সকালে যুবভারতী পৌঁছে যায় তদন্ত কমিটি।
পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, "আমি যখন খেলা দেখতে যাই, তখন সেটার পর্যবেক্ষণ জানাই। আজ আমি এখানে পরিদর্শনে এসেছি। এখানে কী পরিস্থিতি সেটা দেখতে এসেছিলাম। এখনই মতামত দেওয়া ঠিক হবে না। তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে। আমরা গতকাল রাতেও আলোচনায় বসেছিলাম। এখন এখানকার কী পরিস্থিতি সেটা দেখতে এসেছিলাম।"
কিন্তু ক্ষতিপূরণ কি দেওয়া হবে? সেই নিয়ে এখনই মন্তব্য করতে রাজি নন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। তিনি বলেন, "ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায় কি না, বা কীভাবে দেওয়া যায়, সবই খতিয়ে দেওয়া যায়। এখনই এই নিয়ে মতামত দেওয়া যাবে না। আমরা তদন্ত করছি। আমাদের সরকার বলেছে তদন্ত করতে। আমরা সেটা করছি। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের পরিস্থিতি না ঘটে, তার ব্যবস্থা নেওয়া। আমরা সেটা করে নিয়ে আমাদের কী বক্তব্য জানাব। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ যথাসময়ে জানানো হবে। কেন বা কীভাবে এই ঘটনা হয়েছিল, তার উত্তরও রিপোর্টে দেওয়া হবে।"
তিনি জানিয়েছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, এই কমিটি সব দিকে দেখে-শুনে ব্যবস্থা নেবে। তাঁরা 'প্রো-অ্যাক্টিভ'। 'প্রো-রিঅ্যাক্টিভ' হতে চান না। আর তদন্ত 'মিডিয়া ট্রায়াল' যেন না হয়, সেই ব্যাপারেও সচেতন তাঁরা।
রবিবার তদন্ত কমিটির যে দল যুবভারতী পরিদর্শনে যায়, তার মধ্যে ছিলেন মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ, স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, ক্রীড়া সচিব রাজেশ সিনহা প্রমুখ। এছাড়া ছিলেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ ও ডেপুটি পুলিশ কমিশনার অনিল সরকার। তদন্ত কমিটির প্রতিনিধিরা ও বিধাননগর পুলিশ যুবভারতী পরিদর্শন করেন। তদন্ত কমিটির তরফ থেকে যুবভারতীর অবস্থা ভিডিও করা হয়। গোটা বিষয়টাই তাঁরা কঠোরভাবে সামলাচ্ছেন। রবিবার সকালেই যুবভারতীতে তাঁদের আগমন সেই তৎপরতারই প্রমাণ বলে মনে করা হচ্ছে।
