নিরুফা খাতুন: আনন্দপুরের সাজানো ‘ধর্ষণ’-এর ঘটনা এবং অপহরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে হায়দরাবাদ (Hyderabad)থেকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশ। শুধু মূল অভিযুক্তই নয়, নেতাজি নগর (Netaji Nagar PS) থানার পুলিশের হাতে একই জায়গা থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে আরও ২ জন। জোড়া অপরাধের ঘটনা এদেরই মস্তিষ্কপ্রসূত বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সূত্রে। ধৃতদের নাম বিক্রম দাস, অয়ন দাস, সুশান্ত মণ্ডল। এদের মধ্যে বছর সাঁইত্রিশের বিক্রম দাস মাস্টারমাইন্ড। ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনার পর পেশ করা হবে আদালতে।
আসল ঘটনা বেশ জটিল। গত সপ্তাহে আনন্দপুর (Anandapur) থানায় চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণের এক অভিযোগ দায়ের হয়। পাশাপাশি প্রায় একই সময়ে নেতাজি নগর থানার পুলিশের হাতে আসে যুবক অপহরণের (Kidnap)অভিযোগ। পরের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে, আনন্দপুর থানায় দায়ের হওয়া ধর্ষণের অভিযোগের যোগাযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সাক্ষ্য ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয় যে ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ সাজানো ছিল। ধর্ষণে অভিযুক্ত বলে যাঁর নাম উঠেছে, সেই শুভজিৎ মণ্ডলকেই অপহরণ করে আটকে রাখা হয়েছে এবং তিনিই আসল শিকার বা Victim.
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে মুখোমুখি মোদি-মমতা, রাজ্যের বকেয়ার দাবিতে বৈঠক আগামী সপ্তাহেই]
দুটি ঘটনাতেই মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসে বিক্রম দাস নামে এক যুবকের নাম। লালবাজার সূত্রে খবর, অপহৃত যুবকদের সঙ্গে আনন্দপুরে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের নাম এক থাকায় প্রথমে মনে হয়েছিল অভিযুক্তরা নিজেদের বাঁচাতে অপহরণের গল্প ফেঁদেছে। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে তরুণীয় অভিযোগ মত যে সময় ধর্ষণ করা হয়েছিল ওই সময় গাড়ি চালাচ্ছিলেন সৌভিক। আর এই সৌভিক নেতাজি নগর ফ্ল্যাটে শুভজিতদের অপহরণ করে রেখেছিল এবং সে তরুণীর ঘনিষ্ঠ ওই বন্ধুর পূর্ব পরিচিত। তাই সেই রাতে আদৌ তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল নাকি তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তদন্তকারীরা। মাস্টারমাইন্ড হিসেবে উঠে আসে বিক্রম নামে এক যুবক। মুম্বইয়ে আর্থিক প্রতারণার পর সেখান থেকে পালিয়ে কলকাতায় এসেও সে তোলা আদায়ের কাজ করছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়।
[আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকের ১৪ হাজার শূন্যপদের কাউন্সেলিং বন্ধ নয়, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট]
তার খোঁজে নেমে নেতাজি নগর থানার পুলিশ হায়দরাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিক্রমকে। সঙ্গে দুই সঙ্গী অয়ন দাস, সুশান্ত মণ্ডলকেও গ্রেপ্তার করে। আনন্দপুরের সাজানো ধর্ষণকাণ্ড ও অপহরণ – জোড়া ঘটনাতেই বিক্রমের ভূমিকা রয়েছে বলে প্রায় নিশ্চিত তদন্তকারীরা।