কৃষ্ণকুমার দাস: পুজো মিটতেই নিবিড় জনসংযোগে নেমে পড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। আগামী ১১ থেকে ২২ অক্টোবর বাংলাজুড়ে পাঁচশোর বেশি জনসভা করবে শাসকদল। জেলায় জেলায় এই সভাগুলিতে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের রাজ্য নেতারা। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই রাজ্য নেতাদের জনসংযোগ কর্মসূচির প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, পুজোর পর থেকে পালা করে করে জেলায় জেলায় গিয়ে সভা করবেন রাজ্য নেতারা। সেজন্য নির্দিষ্ট রুটিনও বেঁধে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের তরফে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Elections) আগে জনসংযোগে আরও জোর দিতে চায় শাসকদল। সেই লক্ষ্যেই পুজোর পর বিজয়া সম্মিলিনীর আঙ্গিকে এই সভাগুলির আয়োজন করা হবে। রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে এই জনসভাগুলি হবে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, এই সভাগুলি থেকে মানুষকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি রাজ্য সরকারের ভাল কাজগুলি মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন জনবিরোধী নীতির কথাও মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, “এই সভাগুলি থেকে কেন্দ্র সরকারের অপশাসনের কথা যেমন তুলে ধরা হবে, তেমনই মূল্যবৃদ্ধি, এজেন্সিভিত্তিক প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির কথা তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে তুলে ধরা হবে রাজ্য সরকারের জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলি। নিয়োগ সমস্যা মেটাতে শিক্ষামন্ত্রী যে প্রস্তাব দিয়েছেন বা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মানুষের জন্য যেসব কর্মসূচি গ্রহণ করছেন সেগুলির কথাও সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে। “
[আরও পড়ুন: আরও দু’দিন গ্রেপ্তার করতে পারবে না CBI, সুপ্রিম কোর্টে বাড়ল মানিক ভট্টাচার্যর রক্ষাকবচের মেয়াদ]
আসলে এই মুহূর্তে এসএসসি (SSC), কয়লা, গরুপাচার কাণ্ডে বেশ চাপে তৃণমূল। শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রচার-অপপ্রচার দুইই করছে বিরোধীরা। এই সভাগুলিতে তারই পালটা প্রচার চালানো হবে। মানুষকে বোঝানো হবে, তৃণমূল সরকার স্বচ্ছভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার জোর দিচ্ছে। যোগ্যতার ভিত্তিতে অতিরিক্ত পদ তৈরিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। বল এখন আদালতের কোর্টে। আবার দুয়ারে রেশন প্রকল্প নিয়েও বোঝানো হবে, রাজ্য সরকার নিবিড় উন্নয়নে বিশ্বাসী। সেজন্যই বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছিল। কিন্তু রেশন ডিলারদের চুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা মামলা করে সেটা আটকানোর চেষ্টা করছে। একইভাবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচির কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এই সভাগুলিকে ব্যবহার করবে শাসকদল।
[আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে সুখবর, পুজোর আগেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বাড়ল ৪ শতাংশ]
আসলে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) দলের নেতাদের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দিয়েছেন। সুষ্ঠুভাবে পঞ্চায়েত ভোটের আয়োজন করেই তৃণমূল নেত্রীকে সব জেলা পরিষদ উপহার দিতে হবে। সেই লক্ষ্যপুরণের জন্যও প্রয়োজন নিবিড় জনসংযোগ। সেকারণেই রাজ্য নেতাদের এভাবে জেলায় জেলায় পাঠানোর কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।