কৃষ্ণকুমার দাস: বিধানসভার অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র (Babul Supriyo) সময়ে না আসা এবং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনার বিষয়টি শুক্রবারও বিধায়কদের মধ্যে জোর চর্চা চলে। এমনকী, গত অধিবেশনে পর্যটন দপ্তরের প্রশ্নোত্তর পর্বে বাবুলের তথ্যে গরমিল থাকায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে উঠে উত্তর দিতে হয়েছিল বলেও দলীয় বিধায়কদের আলোচনায় উঠে এসেছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, দু’দিন আগে নেতাজি ইন্ডোরে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকেও প্রয়োজনে পর্যটনমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র খোঁজ করেও পাননি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাধ্য হয়ে পুজোর সময়ে মন্ডপে মণ্ডপে পর্যটন দপ্তরের বিজ্ঞাপন এবং হোর্ডিং দিয়ে কীভাবে মুড়িয়ে দিতে হবে তা নিয়ে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভার প্রশ্নোত্তরপর্বে গত বৃহস্পতিবার প্রথমার্ধে বিধায়ক কল্লোল খাঁয়ের লিখিত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার কথা ছিল পর্যটনমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র। কিন্তু তিনি সময়ে হাজির না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বয়ং স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে অধিবেশন কক্ষে বাবুল আসেন। আর তাতেই নাকি ক্ষুব্ধ হন স্পিকার। অবশ্য দেরিতে আসা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে শাসকদলের বিধায়ক কল্লোল খাঁ-কে। এদিন কল্লোলবাবুই ছিলেন প্রশ্নকর্তা। এরপরই উষ্মা প্রকাশ করে বাবুলের উদ্দেশ্যে স্পিকার বলেন, “আপনারা সময়ে না এলে সব গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে। এটা আপনাদের কাছে প্রত্যাশিত নয়।”
[আরও পড়ুন: বন্ধ দোকানপাট, গড়াচ্ছে না বাসের চাকা, ৬ বছর পর পাহাড় বন্ধে বিপাকে পর্যটকরা]
এরপরই অন্য একটি বিষয় নিয়ে বাবুলের উদ্দেশ্যে স্পিকারের মন্তব্য, “রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকদের প্রয়োজনে সরকার নানা ব্যবস্থা রেখেছে। কিন্তু অনেক জায়গায় পরিষেবা নিয়ে অভিযোগও থাকে। মন্ত্রীদের তো যোগাযোগই করা যায় না। আর সকলের অভিযোগ সমান গুরুত্ব পায় না।” কিছুটা তির্যক সুরে স্পিকারের মন্তব্য, “সবাই তো আর বাবুলের ‘আক্সেস’ পায় না।’’ এরপরই অবশ্য পর্যটনমন্ত্রী উত্তর দিয়ে বলেন,‘‘পর্যটন দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রচুর ই-মেল পাই। টিডিসিএলের গ্রিভান্স রয়েছে।”
পর্যটন দপ্তরে একটি গ্রিভান্স সেল চালুর পরামর্শ দিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘বেড়াতে গিয়ে পর্যটকদের অনেকসময় হেনস্তা হতে হয়। অনেক মধ্যবিত্তের আর্থিক ক্ষমতা নেই। তাঁরাও বেড়াতে যান। মুখ্যমন্ত্রী চান না তাঁরা কোনওভাবে হেনস্তা হন। তাই অভিযোগ জানানোর জন্য একটা গ্রিভান্সেল রাখা দরকার।’’ অধ্যক্ষ মন্ত্রীকে পর্যটন সংক্রান্ত একটা তথ্যচিত্রও তৈরি করতে বলেন। জানান, “বিধানসভার অডিটরিয়ামে ওই তথ্যচিত্র দেখালে সমস্ত বিধায়করা অবগত হবেন।”