স্টাফ রিপোর্টার: বাড়তি কাজের চাপ কমানো-সহ একাধিক দাবিতে দিনভর বিএলওদের বিক্ষোভে শুক্রবার ফের উত্তেজনা রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কার্যালয়ের সামনে। বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির সেই আন্দোলনের চাপে শেষ পর্যন্ত দিনের শেষে বিএলওদের উপর নতুন জারি হওয়া কাজের নির্দেশ প্রত্যাহার করে নিল নির্বাচন কমিশন।
বিএলওদের উপর থেকে বাড়তি কাজের চাপ কমানো, এসআইআরের সময়বৃদ্ধি, মৃত ও অসুস্থ বিএলওদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা-সহ একাধিক দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে সিএও দপ্তরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার বেশ কিছু রাজ্যের সময়সীমা বাড়ানো হলেও পশ্চিমবঙ্গে সময়সীমা বাড়ানো না হওয়ায় এদিন সকাল থেকে জোরালো বিক্ষোভ দেখানো শুরু হয় অবস্থানস্থল থেকে। পরে সেই বিক্ষোভ রাস্তায় নেমে আসে।
জোরালো স্লোগানের পাশাপাশি দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার ও রাজ্যের সিইইও মনোজ আগরওয়ালের ছবিতে জুতোর আঘাত করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ ব্যারিকেড করে বিক্ষোভকারীদের আটকে দেয়। এ সময় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী ব্যারিকেডের উপর উঠে পড়লে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন বাংলার প্রকৃত ভোটারদের বাদ দিতে চাইছে। যে কারণে দিল্লি থেকে একের পর এক পর্যবেক্ষক পাঠানো হচ্ছে। এবং তার দায়টা বিএলওদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে। এর প্রতিবাদেরই আমাদের আন্দোলন।’’
বিকেলে বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির একটি প্রতিনিধি দল অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দিব্যেন্দু দাসের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেয়। বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক বাপ্পাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ রাজ্যে এসআইআর পর্বে ফর্ম জমা নেওয়া শেষ হলেও বিএলওদের নিত্য নতুন কাজের ভার চাপানো হচ্ছে। শুক্রবার সকালে বিএলও অ্যাপে ‘সিমিলার ফটো ইলেক্টর ভেরিফিকেশন’ নামে নতুন ফিচার যোগ করে ভোটারদের ছবি মেলানো ও না মিললে ফের ছবি তুলে আপলোড করতে বলা হয়েছে।কাজ শেষ হওয়ার পরও কেন নতুন ফিচার, তা নিয়েই ক্ষোভ বিএলও বিএলও অধিকার রক্ষা কমিটির। শেষ পর্যন্ত অতিরিক্ত সিইও-র সঙ্গে আলোচনার পর ওই নতুন নির্দেশে ছবি আপলোড করার নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে কমিশন সূত্রে খবর।
এদিকে এদিন সকালে এসআইআরের কাজে নিযুক্ত বিএলওদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বন্দোবস্তের জন্য রাজ্য সরকারকে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে লোকভবন জানিয়েছে, বিএলওদের যাতে কোনওভাবে হুমকি দেওয়া না হয় এবং এসআইআর প্রক্রিয়া কোনও বাধা ছাড়াই সম্পন্ন হয় তার নিশ্চিতকরণ চান রাজ্যপাল। বোসের পরামর্শ, ‘গণনা বা সমীক্ষা অভিযানের সময় বিএলওদের সঙ্গে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ কর্মী মোতায়েন করুক রাজ্য প্রশাসন। জেলা প্রশাসন যেন গ্রাম ও শহরে বিএলওদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করে। তা ছাড়া বিএলওদের কাজের জন্য ন্যূনতম সুবিধার ব্যবস্থা করারও পরামর্শ দিয়েছেন রাজ্যপাল।
