সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কসোভোয় বসবাসকারী সার্বদের উপরে হামলা হতে পারে, এই আশঙ্কায় যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করেছে সার্বিয়া। ফলে অস্থির বলকান অঞ্চলে আবারও ঘনিয়েছে যুদ্ধের মেঘ। কসোভোর অভিযোগ, সার্বিয়াকে মদত দিচ্ছে রাশিয়া। ক্রেমলিনের উসকানিতেই সেনা সমাবেশ শুরু করেছে বেলগ্রেড। এদিকে, সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো।
জানা গিয়েছে, কসোভো সীমান্তে বিপুল মাত্রায় সেনা মোতায়েন করেছে সার্বিয়া (Serbia)। পালটা প্রস্তুতি শুরু করেছে কসোভো। পরিস্থিতি এতটাই জটিল, যে কোনও মুহূর্তে বেজে উঠতে পারে যুদ্ধের দামামা। গত মঙ্গলবার সার্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইলোস ভুসেভিচ জানিয়েছেন, তাদের সেনাবাহিনী যুদ্ধ প্রস্তুতির সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে । বেলগ্রেডের এই সেনা তৎপরতা কসোভোর পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। অভ্যন্তরীণ শান্তি বিঘ্নিত হওয়া এবং পড়শি দেশের সম্ভাব্য হামলা- এই জোড়া আশঙ্কার মুখে কসোভোর প্রেসিডেন্ট ভিয়োসা ওসমানি। এই বিষয়ে কসভোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেলাল শভেসলার মন্তব্য, সার্বিয়াকে মদত দিচ্ছে রাশিয়া। রুশ উসকানিতেই কসোভোকে আশান্ত করার চক্রান্ত হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: গাম্বিয়ার পর উজবেকিস্তান, ভারতের কফ সিরাপ খেয়ে ১৮ শিশুর মৃত্যু! তদন্তের নির্দেশ কেন্দ্রের]
বলে রাখা ভাল, প্রিস্টিনার সব থেকে বেশি চিন্তা হচ্ছে সার্ব-অধ্যুষিত এলাকা মিত্রোভিচা নিয়ে। এই শহরের সার্বদের উপরে হামলা চালাতে পারে ওসমানির বাহিনী, এই আশঙ্কা গত কয়েক দিন ধরেই বাড়ছে। গত ১০ ডিসেম্বর থেকে শহরের সার্ব অধ্যুষিত ও আলবেনীয় অধ্যুষিত এলাকার সংযোগকারী রাস্তায় বিশাল বিশাল ট্রাক রেখে এলাকা দু’টি পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন শহরের সার্ব বাসিন্দারাই।
এদিকে, প্রিস্টিনার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে মস্কো। বুধবার এই বিষয়ে এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন স্পষ্ট জানিয়েছে, আলবেনিয়ান সংখ্যাগুরু কসোভোয় বসবাসকারী সার্ব ভূমিপুত্রদের রক্ষা করার সম্পূর্ণ অধিকার আছে সার্বিয়ার। তবে এই সংঘাতে রাশিয়ার কোনও ভূমিকা নেই। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “সার্বিয়া একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র। তাই তাদের সিদ্ধান্তে রাশিয়ার ছায়া খোঁজা উচিত নয়। খুব স্বাভাবিকভাবেই সার্বরা নিপীড়িত হলে তারা (সার্বিয়া) প্রতিক্রিয়া দেবে।”
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা করে কসোভো (Kosovo)। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি কসোভোকে স্বীকৃতি দিলেও তা মেনে নেয়নি সার্বিয়া। ফলে বলকান অঞ্চলে সংঘাতের বারুদ মজুত ছিলই। বিগত দেড় দশক থেকে কসোভোয় আমেরিকা ও ইউরোপের মিলিত শান্তিরক্ষা বাহিনী মজুত রয়েছে।