সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: নিজেদের দাবিতে এখনও অনড় কুড়মিরা। আন্দোলনের পঞ্চম দিন, শনিবারেও বন্ধ রেল ও বাস পরিষেবা। বাতিল বহু ট্রেন। রেললাইনে দাঁড়িয়ে মালগাড়ি। তার ফলে সবজি পচে যাওয়ার আশঙ্কা। আন্দোলনের জেরে ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা।
কুড়মি জনজাতিকে আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার দাবিতে ফের মঙ্গলবার থেকে আন্দোলন শুরু হয়েছে পুরুলিয়ায়। রেল অবরোধ করে প্রতিনিধিরা দাবি আদায়ের জন্য রাস্তায় নেমেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের রেল লাইনে শুয়ে পড়ে রেল চলাচল সম্পূর্ণ আটকে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। ফলে বাতিল করা হয় বহু ট্রেন। শুধু রেল লাইন নয়, ৫ নম্বর জাতীয় সড়কও অবরোধ করেন কুড়মি সমাজের প্রতিনিধিরা। রেল পরিষেবার পাশাপাশি সড়কপথও বন্ধ। একের পর এক দাঁড়িয়ে পড়ে বাস, ট্রাক, লরি, গাড়ি।
[আরও পড়ুন: আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রাথমিক টেট, অ্যাডহক কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত]
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কেন্দ্রের কাছে একাধিকবার তদ্বির করেছে রাজ্য সরকার। গত বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের কাছে সংশোধিত সিআরআই (CRI) রিপোর্ট রাজ্য সরকার বৃহস্পতিবার পাঠিয়ে দেয়। তারপর শুক্রবার বিকেলে সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে সেই রিপোর্টের প্রতিলিপি অবরোধকারীদের হাতেও পৌঁছয়। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রতিলিপিটি পৌঁছে দেওয়া হয় তাঁদের হাতে।
আন্দোলনকারীদের দাবি, রাজ্যের তরফে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো সিআরআই রিপোর্টটিতে ‘ভুল’ রয়েছে। সেই অভিযোগে পঞ্চম দিনেও অবরোধ প্রত্যাহারে নারাজ কুড়মিরা। শনিবারও দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের পুরুলিয়ার আদ্রা ডিভিশনের আদ্রা-পুরুলিয়া শাখার অবরোধস্থল কুস্তাউর স্টেশনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। দাবিপূরণ না হলে সমগ্র জঙ্গলমহল স্তব্ধ করে দেওয়ার হুমকি তাদের। বেলা ১১টা নাগাদ অবরোধস্থলে যাওয়ার কথা আদিবাসী কুড়মি সমাজের মূল মানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতোর। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। সেই বৈঠকের পরই পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে কুড়মিদের পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানা যাবে। এদিকে, কুড়মিদের আন্দোলন নিয়ে চলছে জোর রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ নাম না করে পরোক্ষে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। যদিও সে অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি জানান, কুড়মিদের দাবিপূরণ করা রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। তা করতে হবে কেন্দ্রকেই। তাই এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। পরিবর্তে সাধারণ মানুষের কথা ভেবে অবিলম্বে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে।