সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয় ও মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়িতে আক্রমণের অভিযোগে পুলিশ কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ) সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক রাজেশ মাহাতোকে গ্রেপ্তার। শুধু আইনি পদক্ষেপ নয়, তাঁকে বদলিও করা হয়েছে। খড়গপুরের স্কুল থেকে তাঁকে কোচবিহারে বদলি করা হয়েছে বলে খবর। সূত্রের খবর, ডিএ আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন রাজেশ। কো-অর্ডিনেশন কমিটির ডাকা বন্ধে স্কুলে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন বলেও অভিযোগ। এরপরই শনিবার তাঁকে বদলি করা হয়েছে। যার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
মন্ত্রী-বিধায়কদের কনভয়ে হামলার অভিযোগে শনিবারই পুলিশ একটি কুড়মি সংগঠনের রাজ্য সভাপতি-সহ সাতজনকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের মধ্যে অনুপ মাহাতো, অজিত মাহাতো, অমিত মাহাতো ও মনপীত মাহাতোকে এদিনই আদালতে পেশ করে বিচারকের নির্দেশ মেনে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। দিনভর তল্লাশি শেষে সন্ধ্যায় কুড়মি সমাজ (পশ্চিমবঙ্গ) সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক রাজেশ মাহাতো, রাকেশ মাহাতো ও শিবাজি মাহাতো-সহ আরও কয়েকজনকে নয়াগ্রাম থেকে পুলিশ আটক করে। ঝাড়গ্রামের এসডিপিও অনিন্দ্যসুন্দর ভট্টাচার্য শনিবার দুপুরে বলেন, ‘‘হামলার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে হামলায় জড়িত অন্যদেরও সন্ধান চলছে।’’ রবিবার সকালে রাজেশ মাহাতোকে গ্রেপ্তার করা হয়।
[আরও পড়ুন: কৃতী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে রাজনৈতিক বিবৃতির লড়াই? কমরেড, ক’টা কথা ছিল]
অন্যদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলিতে বেআইনি জমায়েতের অভিযোগে পুলিশ আদিবাসী কুড়মি সমাজের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি কমলেশ মাহাতো-সহ মোট তিনজনকেও গ্রেপ্তার করেছে। কুড়মিদের দুই গোষ্ঠীর মোট দশজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও চারজনকে মাত্র আদালতে পাঠানো হয়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হল, গত এপ্রিল মাসে ও তারও মাস কয়েক আগে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালাতে এই কুড়মি সমাজকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠিয়ে বিজেপি মদত দিয়েছিল বলে অভিযোগ।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, বিজেপিরই একটি অংশ পরিকল্পনামাফিক ষড়যন্ত্র করে কুড়মি সমাজের একাংশকে মদত দিয়ে বীরবাহাদের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে। যদিও এদিন রাজেশ বলেন, ‘‘আমরা কেউ এই হামলায় যুক্ত নই। বহিরাগতরা কেউ বদনাম করতে হামলা করেছে।’’ ঘটনায় বিজেপির একাংশ যুক্ত বলেও নাম না করে ইঙ্গিত দিয়েছেন কুড়মি আন্দোলনকারীরাও। এরপরই তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ টুইট করে বলেন,‘‘জয় শ্রীরাম বলে কারা এসেছিল তা স্পষ্ট।’’
কুড়মি সমাজের রাজ্য সম্পাদক তথা আন্দোলনের অন্যতম মুখ রাজেশ মাহাতোকে কোচবিহারের চামতা আদর্শ হাই স্কুলে বদলি করা হয়েছে। রাজেশবাবু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুরের বনপুরা হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন। এই বদলির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। টুইটারে তিনি দাবি করেছেন, “রাজ্যে একনায়কতন্ত্র চলছে। এটা তারই প্রমাণ।” শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিদের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে আরজি জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক।