সাবির জামান, লালবাগ: ওষুধের রাসায়নিক গঠনের উপর নির্ভর করে মানবদেহে ওই ওষুধ কতটা কার্যকারী ভূমিকা গ্রহণ করবে, গবেষণার বিষয় ছিল এটাই। আর তার উপর ভিত্তি করেই ‘ভিডি গুড ইন্টারনাশন্যাল সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) লালগোলা থানার তারানগর গ্রামের বাসিন্দা ডঃ মহম্মদ মইদুল ইসলাম। সম্প্রতি কোয়েম্বাটুরে অনুষ্ঠিত সায়েন্সের এক সেমিনারে ‘বেস্ট রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড’ দিয়ে সম্মানিত করা হয় ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তবাসী এই তরুণ গবেষককে। ডঃ মইদুল ইসলাম ছাড়া বিশ্বের আরও পাঁচ গবেষক এই সম্মান লাভ করেছেন।
এক সময় পদ্মার করাল গ্রাসে ফসলি জমি হারিয়েছিল পরিবার। তারপর ছেলের পড়াশোনার তাগিদে তারানগর গ্রাম থেকে উঠে এসে লালগোলায় বসত গড়েন মইদুলের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট বাবা মহম্মদ জাহেদুল ইসলাম। মইদুল এখন কলকাতা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন (Chemistry) বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত। তাঁর গবেষণার বিষয় নতুন ওষুধের গঠন নির্ণয়, সিন্থেসিস এবং প্রাণীদেহে ওষুধের (Medicines) কার্যকারিতা।
[আরও পড়ুন: ভাইরাস ভেবে রোগীর শরীরেই হামলা, বিপদ বাড়াচ্ছে করোনার অ্যান্টিবডি! দাবি গবেষকদের]
দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে এই গবেষণায় ব্যস্ত প্রফেসর মইদুল বলেন, “যে কোনও জৈব অনু কিংবা ওষুধের বন্ধন বেশি কার্যকারী হয়ে ওঠে তার আণবিক গঠনের উপর। আবার কাছাকাছি গঠনযুক্ত কিছু জৈব অণুর গঠনের সঙ্গে তার কার্যকরণ নির্ণয় করা গেলে গণনার দ্বারা জৈব অণুর গঠন নির্ভর করা যায়, তা আশানুরূপ কাজ করবে। এই পদ্ধতির ফলে নতুন ওষুধের ডেভেলপমেন্টের খরচ যেমন কম হবে সময়ও কম লাগবে।”
[আরও পড়ুন: আমজনতার ‘বোধ-অন’ করতে করোনা বধে ময়দানে এক কোটি ‘দুর্গা’]
মূলত জৈব অনুর সঙ্গে ডিএনএ (DNA), আরএনএ (RNA) ও প্রোটিনের বন্ধন নির্ণয় করা এবং জৈব অণুর আণবিক গঠনের সঙ্গে তার কার্যকরণ সম্পর্ক নির্ণয় করার কাজ করে চলেছেন ডঃ মইদুল। তার এই কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য সরকারের ডিপার্টমেন্ট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি। এছাড়াও আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সবরকম ভাবে সাহায্য করেন বলে দাবি করেছেন রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক। এর আগে ‘খাবারে রঙের প্রভাব’ সংক্রান্ত গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য মইদুল ২০০৯ ,২০১৬ এবং ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক সম্মান লাভ করেছেন।
ছবি: সাবির জামান।