স্টাফ রিপোর্টার: করোনা সংক্রমণের ঠিক ৫ বছরের মাথায় শীতের শুরুতে চিনের উত্তরাংশে দাপাচ্ছে নিউমোনিয়া (Pneumonia)। ইউহান প্রদেশ থেকে প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার দূরে এই নিউমোনিয়ার ছোবলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে কয়েক হাজার শিশু। সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার হল রোগের অণুজীবকেই চিহ্নিত করতে পারেননি চিনের বিজ্ঞানীরা। আপাতভাবে মনে হচ্ছে মাইকোপ্লাজম সেনসিটিয়াল ভাইরাস এবং নিউমোনিয়া ইনফ্লুয়েঞ্জা, এই দুই অণুজীবই সংক্রমণের নেপথ্যে। কিন্তু মাঝখানে আর কোনও শত্রু আছে কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিউমোনিয়ার সফট টার্গেট সদ্যোজাত থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা। সংক্রমণের শুরুতে বাচ্চাদের প্রোটোকল মেনে অ্যান্টি বায়োটিক দিতে রাজি ছিল না চিন (China) প্রশাসন। কিন্তু মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আক্রান্তদের অবস্থা এতোটাই কাহিল হয়ে যাচ্ছে যে প্রশাসন বাধ্য হয়ে হাসপাতালগুলিকে অ্যান্টি বায়োটিক ব্যবহারের নির্দেশ দিতে। ইতিমধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চিন প্রশাসনের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে। কিন্তু বজ্র আঁটুনী থেকে বেরিয়ে চিনের কমিউনিস্ট সরকার কতটা রাজি হবে তা নিয়ে বিশ্বের বিশেষজ্ঞ মহল রীতিমতো উৎকণ্ঠায়। কারণ কোভিডের সময়ও সংক্রমণ নিয়ে কোনও তথ্য় আদানপ্রদান করেনি চিনের লাল সরকার।
[আরও পড়ুন: মালদহের পর বাঁকুড়া, রাস্তা কাটা থাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি! পথেই মৃত্যু প্রসূতির]
চিনের নিউমোনিয়ায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে ভারতেও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক রীতিমতো পর্যবেক্ষণ করছে অবস্থার গতিপ্রকৃতি। কাকতালীয়ভাবেই ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর কয়েক মাস আগেই নিউমোনিয়ার প্রোটোকল প্রকাশ করেছে। রাজ্যের বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেছেন. “চিন থেকে এশিয়া বা ভারতে নিউমোনিয়া ছড়াবে এমনটা এখনই ভাবার কোনও প্রশ্ন নেই। কিন্তু সমস্যা হল, এর নেপথ্যে যে ভিলেন রয়েছে তাকেই তো ওরা এখনও চিহ্নিত করতে পারেনি। কাজে শত্রুকে যদি চিনতেই না পারা যায় তাহলে মোকাবিলা করবে কী করে?”
মনে রাখতে হবে, করোনার পর এই শীতের মরশুমেই প্রথম গোটা চিনজুড়ে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। অফিস-কাছারি খুলেছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে সে দেশ। আর সেই সময়ই নিউমোনিয়ার দাপটে শিশুদের নিয়ে রীতিমতো উৎকণ্ঠায় পরিবারগুলি। সূত্র বলছে, সরকারি হাসপাতালের কোনও শয্যা খালি নেই। প্রতিটি ইনকিউবেটর, ভেন্টিলেশনে রয়েছে আক্রান্ত শিশুরা। শিশু বিশেষজ্ঞদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, এটা হয়তো পোস্ট কোভিড সিন্ড্রোম। তবে তা নিয়েও দ্বিমত রয়েছে।