অভিরূপ দাস: পয়লা বৈশাখ, দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো। বাঙালি ললনাদের শাড়ি বিলাসের দিনতালিকায় নয়া সংযোজন ক্রিসমাস। খ্রিস্টানদের বড়দিনেও (Christmas) এবার চালিয়ে খেলছে বঙ্গনারীর অঙ্গভূষণ। তবে লালপাড় হলুদ তাঁত নয়, নয় জারদৌসি বা কাঞ্জিভরম। বড়দিনে শাড়ির দোকান ছেয়েছে সান্তা ক্লজ শাড়িতে। স্যাটিন কাপড়ের তৈরি এই শাড়ি এখন তিলোত্তমার কামিনী কাঞ্চন। নয়তো ফ্রুটকেক, ফার গাছ, উপহারবুড়ো, বল্গা হরিণের পুতুলঘেরা বড়দিনে শাড়ির দোকানে এত ভিড় হয়! প্রথমটায় চিন্তায় ছিলেন দোকানিরা। বড়দিনে শাড়ি বিক্রি হবে? কিন্তু কিন্তু করে কেউ এনেছিলেন কুড়ি পিস, কেউ বা পঁচিশ। কিন্তু দু’দিনের মধ্যেই সান্তা ক্লজ শাড়ি ভ্যানিশ। অনেকেরই না পেয়ে ব্যাজার মুখ।
নিউমার্কেটের শাড়ির দোকানের পয়লা বৈশাখ, দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো। নিউমার্কেটের শাড়ির দোকানের কর্ণধার নবীন ইশানি জানিয়েছেন, সতেরো পিস এনেছিলাম। বারোশো টাকা করে দাম। দরদামও করেনি কেউ। এক দামেই কিনে নিয়ে গিয়েছে। সান্তা ক্লজ শাড়ির, বডিতে লালে সবুজে লেখা হ্যাপি ক্রিসমাস। আঁচলে ঝোলা হাতে দাঁড়িয়ে ক্রিসমাস বুড়ো। বল্গা হরিণ টেনে নিয়ে যাচ্ছে স্লেজ গাড়ি। এমনই শাড়ি কিনতে নিউমার্কেট গড়িয়াহাট, মানিকতলায় উপচে পড়ছে ভিড়।
[আরও পড়ুন: আজ আইপিএলের নিলাম, হাতে অর্থ কম, দলের শূন্যস্থান ভরাতে পারবে কেকেআর?]
ক্রেতারা অধিকাংশই হিন্দু বাঙালি। কিন্তু বড়দিন (Merry Christmas) তো খ্রিস্টানদের। ‘‘কী যে বলেন মশাই।’’ মুখ বেঁকিয়ে হাসেন নিউমার্কেটের শাড়ির দোকানের নবীন। ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখুন খ্রিস্টানদের থেকে হিন্দু বাঙালিরাই বেশি কিনছেন কেক, টুনি বাল্ব, এমনকী, সান্তা ক্লজ শাড়ি।’’ যে সমস্ত দোকানে শাড়ি বিক্রি হয়ে গিয়েছে তারা আরও নতুন শাড়ির বরাত দিয়েছে। গড়িয়াহাটে বিনোদিনী শাড়ি সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে লম্বা লাইন। মুকুন্দপুর থেকে বয়ফ্রেন্ডকে বগলদাবা করে নিয়ে এসছেন সোমালিকা। দোকানে ঢোকার মুখে বললেন, ‘‘ও জিজ্ঞেস করছিল কী উপহার নেবে। কেক-টেক অনেক খেয়েছি। এবার বড়দিনে আমার সান্তা ক্লজ শাড়ি চাই।’’
সাধারণত বড়দিনের ঠান্ডায় জ্যাকেট, কোটেই ধাতস্থ ছিল বাঙালি চোখ। এবার সান্তা ক্লজ শাড়ির বিক্রি পাল্লা দিচ্ছে জ্যাকেটের সঙ্গে। অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রর কথায়, কলকাতায় এতটাও ঠান্ডা পড়ে না যে শাড়ি পরা যাবে না। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘শাড়ি যথেষ্ট স্টাইলিশ পোশাক। বড়দিনে যথেষ্ট ভাল লাগবে। ডেনিম জ্যাকেট, কোট এমনকী, ফুলহাতা টিশার্ট দিয়েও পরা যায়।’’ তবে নতুন প্রজন্মের এই সান্তা ক্লজ শাড়ি কেনার হিড়িককে হুজুগ বলেই দেখছেন অভিনেত্রী।