shono
Advertisement

গোপনে বাড়ে পাইলস, রক্ষা পাবেন কীভাবে? গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে রাখুন

ভয়কে ভয়ংকর হতে দেবেন না। যথা সময়ে চিকিৎসা প্রয়োজন।
Posted: 04:39 PM Mar 01, 2024Updated: 04:39 PM Mar 01, 2024

গোপনে বাড়তে থাকে অর্শ (Piles)। যা চেপে রাখলে চাপ পড়লেই বেদম ব্যথা শুরু হয়, সঙ্গে রক্তপাত। মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। দ্রুত সুপরামর্শ নিন। এখন অনেক রকম চিকিৎসায় এই অসুখ থেকে মুক্তি সম্ভব। সে ব্যাপারেই জানাচ্ছেন এসএসকেএম হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

সকালের প্রাতঃক্রিয়া যতটা শান্তির ঠিক ততটাই অশান্তির হয়ে ওঠে যদি হয় পাইলস। এটা এমনই একটা অসুখ যার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব চলতে থাকে। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৌলতে আজকের দিনে পাইলস নিয়ে ততটাও চিন্তা নেই। কারণ এখন এই কষ্ট নানাভাবে লাঘব করা সম্ভব হচ্ছে।

কী হয়?
অর্শ বা পাইলসের সঙ্গে যুক্ত শিরাগুলো মলদ্বার বা রেক্টামে সাধারণতভাবে থাকেই। কিন্তু যখন এগুলো ফুলে ওঠে তখন সেটাকে আমরা পাইলস বা অর্শ বলি। সাধারণত দুভাগে ভাগ করা যায়, ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল পাইলস।

চারটে পর্যায়ে পাইলস থাকতে পারে। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে। প্রাথমিক অবস্থায় অর্শ ভিতরেই থাকে, বেরিয়ে আসে না। দ্বিতীয় পর্যায়, শুধুমাত্র মলত্যাগের সময় ফুলে ওঠা শিরা বেরিয়ে আসে। তারপর আবার ভিতরে ঢুকে যায়। তৃতীয় পর্যায়ে পাইলস বাইরে বেরিয়ে আসে, কিন্তু রোগী হাত দিতে তা ভিতরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পারে। শেষ অর্থাৎ চতুর্থ পর্যায়ে পাইলস মারাত্মক পর্যায়ে যায়। রেকটাম থেকে তো বেরিয়ে বাইরে আসেই, কিন্তু কোনওভাবেই তা ভিতরে যায় না।

কীভাবে বুঝবেন আপনার পাইলস হচ্ছে?
সর্বপ্রথম যেটা হয় এই অসুখে তা হল, মলত্যাগের সময় মলদ্বার দিয়ে রক্তপাত।
মলদ্বারে চুলকানি
পাইলসের জন্য রেক্টামে ফুলে ওঠা শিরা বা ধমনিতে থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বেঁধে গেলে তা থেকে খুব যন্ত্রণা হতে পারে।

কাদের ঝুঁকি বেশি
সাধারণত যাঁরা দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন।
যাঁরা খুব মোটা বা মেদবহুল।
যাঁদের ডায়েটে ফাইবার কম থাকে।
এছাড়া গঠনগত কিছু সমস্যা থেকে পাইলসের প্রবণতা দেখা দেয়। যেমন শিরার মধ্যে ভালভ থাকে। কারও কারও ক্ষেত্রে রেকটামের শিরায় সেই ভালভ উপস্থিত থাকে না। ফলত শিরাগুলো আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ফুলে যেতে থাকে। তা থেকে অর্শ হওয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ পায়।

[আরও পড়ুন: ভালো কাজে প্রতিবার বাধা, বাড়িতে নেগেটিভ এনার্জি নেই তো? দূর করবেন কীভাবে?]

কী কী মানতে হবে?
জলপান বেশি করে করতে হবে।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
বড় গামলায় অল্প উষ্ণ জল নিয়ে তাতে এপসম সল্ট ফেলে বা অ্যান্টিসেপটিক কোনও লোশন জলে মিশিয়ে তার উপর বসে ‘সিটস বাথ’ নিতে হবে। রোজ ১০ মিনিট করে করতে হবে।
যাঁদের মলত্যাগের সময় খুব ব্যথা হয় তাঁদের জন্য বিভিন্ন ওষুধও রয়েছে। যেগুলো লাগালে এই ব্যথার কষ্ট অনেকটাই প্রতিহত করা সম্ভব। কিছু খাবার ওষুধও রয়েছে তার দ্বারাও চিকিৎসা করা হয়।

যাঁদের ক্ষেত্রে ওষুধে কাজ হয় না, নানা চিকিৎসায় সুরাহা
ব্যথা বা রক্তপাত বাড়তে থাকে। কিংবা পুনরায় যদি সমস্যা ফিরে আসে তাহলে কোলনোস্কোপি করে রোগ কতটা বিস্তৃত হয়েছে সেটা দেখা হয় এবং চিকিৎসাও করা হয়।
সাধারণত ব্যান্ডিং করে অর্শ নির্মূলের চেষ্টা করা হয়। এক্ষেত্রে অর্শের শিরাকে বিশেষ মেডিকেটেড রবার ব্যান্ড পরিয়ে রেখে দেওয়া হয়। ফলে শিরায় ধীরে ধীরে রক্তচলাচল বন্ধ হয়ে শিরা অকেজো হয়ে যায়। কষ্ট লাঘব হয়, অর্শ ধীরে ধীরে সেরেও যায়। এটা কোলনোস্কোপি পদ্ধতিতে করা হয়।

এই পদ্ধতিতে আরও একটি চিকিৎসা করা হয়, যার নাম স্ক্লেরোথেরাপি। এক্ষেত্রে ফুলে যাওয়া শিরায় এক ধরনের ক্যমিক্যাল কোলনোস্কোপির দ্বারা ইনজেকট করে দেওয়া হয়। ফলে ফুলে যাওয়া শিরা শুকিয়ে খসে পড়ে যায়।

শল্যচিকিৎসায় লেজারের গুরুত্ব
সাধারণত পাইলসের চিকিৎসায় হেমারয়েড এক্টোমি করে অপারেশন করা হয়। অর্থাৎ অর্শ বা হেমারয়েডকে কেটে বাদ দেওয়া হয়।
হেমারয়েডপেক্সি পদ্ধতিতে হেমারয়েডের ফুলে যাওয়া অংশ বিশেষ মেডিকেটেড স্টেপলার দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। তারপর ধীরে ধীরে অর্শ খসে পড়ে যায়।
বর্তমানে এই সমস্যায় সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে লেজার ট্রিটমেন্ট। এতে সুবিধাও অনেক। এই চিকিৎসা করতে গিয়ে একদম অল্প কেটে চিকিৎসা করা যায়। এবং রোগীকে খুব অল্প সময় হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হচ্ছে, লেজারে ব্যথা, যন্ত্রণাও একদম কম হয়। এই চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও খুব কম।

[আরও পড়ুন: রাত হলেই ফোন সেক্সের ইচ্ছে জাগে? মাথায় রাখুন এই ৫ বিষয়]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement