দীপঙ্কর মণ্ডল: অপেক্ষার অবসান। আগামী সপ্তাহ থেকেই রাজ্যে চলবে লোকাল ট্রেন। বৃহস্পতিবার নবান্নে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়, আগামী বুধবার থেকে শিয়ালদহ, হাওড়া শাখায় সাধারণ যাত্রীদের জন্য চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। আপাতত স্থির হয়েছে, শিয়ালদহ শাখায় দৈনিক ১১৪ জোড়া ট্রেন, হাওড়ায় ৫০ জোড়া ট্রেন চলবে। সব স্টেশনেই দাঁড়াবে ট্রেন। এরপর পরিস্থিতি বিবেচনা করে লোকাল ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। এই খবরে স্বভাবতই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন নিত্যযাত্রীরা। তবে নিউ নর্মালে একাধিক বিধি মেনে ট্রেনে যাতায়াত করতে হবে।
আনলক ফোর (Unlock 4) থেকে কলকাতা-সহ দেশের অন্যান্য মহানগরীতে চালু হয়েছিল মেট্রো রেল পরিষেবা। নিউ নর্মালে নতুন নিয়ম মেনে চলছে মেট্রোয় যাতায়াত। অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে ই-পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাতে বেশ মসৃণ গতিতেই এগোচ্ছে পাতাল রেলের চাকা। আর আনলক ফাইভে (Unlock 5) মুম্বইতে কলকাতা মেট্রোর মডেলেই চালু হয়ে গিয়েছে লোকাল ট্রেন। সেই মডেলকে সামনে রেখেই বাংলায় লোকাল ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দেয় রাজ্য সরকার। বিশেষত সম্প্রতি রেলকর্মীদের জন্য বিশেষ ট্রেনে উঠতে চেয়ে আরপিএফের হাতে সাধারণ যাত্রীদের ধারাবাহিকভাবে হেনস্তা হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন রেলকে ওই প্রস্তাব দেয়।
[আরও পড়ুন: দক্ষিণবঙ্গে ব্যাটিং শুরু শীতের, দু’দিনে ৪ ডিগ্রি নামল তাপমাত্রার পারদ]
২ তারিখ এবং ৪ তারিখ দু দফায় এ নিয়ে নবান্নে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে রেলকর্তারা বৈঠক করেন। তাতে স্থির হয়, হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখায় রোজ ২০০টি করে ট্রেন চালানো হবে। কী পদ্ধতিতে, কোন সময়ে ট্রেন চলবে, কারা তাতে সফর করতে পারবেন, কীভাবেই বা ট্রেনে চড়া যাবে, তার চূড়ান্ত পদ্ধতি স্থির করতেই বৃহস্পতিবারের বৈঠক ছিল। তাতে স্থির হয়, শিয়ালদহ শাখায় দৈনিক বেশি ট্রেন চলবে। আগের মতো কাউন্টার থেকে টিকিট কেটেই ট্রেনে ওঠা যাবে। তবে মাস্ক বাধ্যতামূলক। সব স্টেশনেই দাঁড়াবে ট্রেন। আর দূরত্ববিধি মানতে জনসচেতনতায় জোর দেওয়া হচ্ছে। অফিস টাইমে ভিড় এড়াতে বেশি ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত রেল-রাজ্যের। আগামী বুধবার অর্থাৎ লোকাল ট্রেন চালুর প্রথম দিন মোট ১৮১ জোড়া ট্রেন চলবে রাজ্যজুড়ে।
[আরও পড়ুন: ‘মমতা সরকারের মৃত্যু ঘণ্টা বেজে গিয়েছে’, বাঁকুড়া থেকে হুঙ্কার অমিত শাহের]
প্রায় ৮ মাস পর আগামী সপ্তাহ অর্থাৎ দীপাবলির পর থেকেই চালু হয়ে যাচ্ছে লোকাল ট্রেন। তাতেই খুশির হাওয়া যাত্রীমহলে। আনলক পর্বে মুম্বইতে সাবধানতা অবলম্বন করে এই পরিষেবা চালু হওয়ার পরই এখানেও তা চালুর জন্য চাপ বাড়ছিল। আর তা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠছিল প্রায় নিত্যদিন রেলের স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে সাধারণের উঠতে চাওয়ায় অশান্তির ছবিতে। শেষমেশ সিদ্ধান্ত নিয়ে সীমিত পরিসরে লোকাল ট্রেন চালুতে সিলমোহর পড়ল। নিউ নর্মালে নতুন পদ্ধতি মেনেই যাত্রীদের সফর করতে হবে। করোনা সংক্রমণ রুখতে আবশ্যিক মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যবহার। তবে করোনা কালে লোকাল ট্রেনের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে যথাযথ এবং সুরক্ষিতভাবে পরিষেবা চালানো রেলের কাছে যে একটা বড় চ্যালেঞ্জ, তা বলাই বাহুল্য।