সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়। একটা সময় এই টেক্সটাইল মোড়ে সিপিএম বিরোধী আন্দোলনে তাঁর নেতৃত্বে জনজোয়ার দেখা গিয়েছে। এই টেক্সটাইল মোড়ে সভা করে সিপিএমের মুন্ডপাত করেছেন বহুবার। আবার সিপিএম আমলে পুলিশের ভয়ে এ রাস্তা দিয়ে ছুটোছুটিও করতে হয়েছে তাঁকে। সেই অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Chowdhury), সেই টেক্সটাইল মোড়ে হাঁটছেন সেই সিপিএমের উত্তরীয় গলায়, যাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করেই কেটেছে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সিংহভাগ। সঙ্গে সিপিএমের বর্তমান রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Mohammad Selim)। রাজনীতিতে স্থায়ী শত্রু বা স্থায়ী বন্ধু বলে কিছু হয় না, অধীর-সেলিমের এই 'ঐক্যে'র ছবি যেন সেই চিরন্তন প্রবাদের প্রামাণ্য।
২০২৪ লোকসভা ভোটের(Lok Sabha 2024) আগে এই প্রথমবার এক ফ্রেমে অধীর চৌধুরী-মহম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিলেন মহম্মদ সেলিম। বহরমপুরের বুকে মিছিল করে শক্তিপ্রদর্শন করলেন বাম-কংগ্রেস (Congress) নেতা কর্মীরা। তাতে সবার সামনের সারিতে ছিলেন অধীর-সেলিম। সেলিমের গলায় এদিন কংগ্রেসের কোনও উত্তরীয় দেখা না গেলেও অধীরের গলায় শোভা পেল কাস্তে হাতুড়ি তারা চিহ্নের উত্তরীয়। অধীর চৌধুরীকে দেখে এক মুহূর্তে মনে হতে পারে, তিনি বুঝি দীর্ঘদিন বামপন্থী আন্দোলন করা কোনও 'কমরেড'।
[আরও পড়ুন: সোমবার থেকেই অনির্দিষ্টকালের জন্য রাজ্যের স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি, জারি বিজ্ঞপ্তি]
আসলে লোকসভা ভোট ঘোষণার পর একসঙ্গে দেখা যায়নি সেলিম-অধীরকে। আসনরফা নিয়ে যা আলোচনা হয়েছে, সবটাই হয়েছে ফোনে ফোনে। বাকি কথা হয়েছে অধীরের ব্যক্তিগত সচিবের মাধ্যমে। এর আগে বহরমপুরে দুই নেতার বৈঠকে বসার কথা থাকলেও সেবার অধীর পিছিয়ে আসেন। দুই নেতাকে একফ্রেমে দেখা না যাওয়ায় নীচুতলায় বাম-কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা জড়তা ছিল। একসঙ্গে প্রচারে অনীহা ছিল। সেই অনীহা কাটাতেই বৃহস্পতিবার একসঙ্গে হাতে হাত রেখে হাঁটলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক। ওই মনোনয়নের মিছিলেই অধীরকে লাল রঙে রাঙিয়ে দিলেন সেলিমরা। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন, যে কংগ্রেস নেতারা এতদিন সিপিএমের 'অত্যাচারে'র বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, তারা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই 'কমরেড'রূপ মেনে নিতে পারবেন তো?
[আরও পড়ুন: উত্তরে প্রকৃতির দুই রূপ, হাঁসফাঁস গরমে পুড়ছে সমতল, তুষারের চাদরে ঢেকেছে সিকিম]
আগামী ৭ মে সেলিমের কেন্দ্রে ভোট। অধীরের কেন্দ্রে ভোট ১৩ মে। বহরমপুরের কংগ্রেস প্রার্থী আরও দু’তিন দিন পরে মনোনয়ন জমা দেবেন। সেদিন সেলিমেরও থাকার কথা। দেখা যাক, সেদিন সেলিমের গলায় কংগ্রেসি উত্তরীয় দেখা যায় কিনা।