কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: এ যেন একেবারে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে। একসময় নিজের দলের লোকজনদের (কংগ্রেসের টিকিট না পেয়ে) 'কুঠার' চিহ্নে নির্দল প্রার্থীপদে ভোটে দাঁড় করাতেন বহরমপুরের বিদায়ী কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। বিরোধীদের তিনি পরাস্ত করতেন সেই ‘কুঠার’ চিহ্নের প্রার্থী দিয়ে। কপালের এমন ফের, এবার সেই 'কুঠার' উদ্যত তাঁরই সামনে। এবারের লোকসভা ভোটে সেই কুঠার ‘আঘাত’ করতে চলেছে অধীর চৌধুরীকে! কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীর ‘নেমসেক' অধীর স্বর্ণকার বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। কোটিপতি অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে অধীর স্বর্ণকার লড়াই করছেন হাতে মাত্র ২৭ হাজার টাকা নিয়ে।
বহরমপুরের নির্দল প্রার্থী অধীর স্বর্ণকার। ছবি: নিজস্ব চিত্র।
বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের (Baharampur Lok Sabha Constituency) পাঁচ-পাঁচবারের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী এবারেও কংগ্রেসের শেষ সলতে। বিগত বছরগুলিতে একেবারে হেলায় জিতেছেন। প্রতিদ্বন্দীরাও জানতেন, অধীরের বিরুদ্ধে ভোটে লড়াইয়ের জ্বালা। নিজের তালুকে অধীরকে টেক্কা দেওয়া তো দূরস্ত, তাঁর নামে কিছু বলতেও ভয় পেতেন শহরের মানুষ। সেই অধীর চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) বিরুদ্ধে এবার আর এক অধীর। অধীর স্বর্ণকার। বাড়ি বহরমপুরের বানজেটিয়ার সুন্দর কলোনিতে। তিনিও প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদের (Congress MP)মতো মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ। তবে সরকারি অফিসে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে চাকরি করেন তিনি। স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে ৪৩ বছরের অধীর স্বর্ণকার এলাকায় সমাজসেবী নামেই পরিচিত।
[আরও পড়ুন: ‘কল্যাণদার জন্যই আমাদের বিয়েটা হয়েছে’, কাঞ্চনকে ‘অপমান’ নিয়ে মুখ খুললেন শ্রীময়ী]
কিন্তু হঠাৎ লোকসভা নিবার্চনে (Lok Sabha Election 2024) কেন? বিরোধী দলের কেউ মদত দিচ্ছে কি? আর হাতে মাত্র ২৭ হাজার টাকা নিয়ে ভোট প্রচার করবেনই বা কীভাবে? প্রশ্নগুলির উত্তরে অধীর স্বর্ণকার বলেন, তিনি রাজনীতিতে নতুন নন। বছর কুড়ি আগে ফরোয়ার্ড ব্লক (Forward Block) থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতে লড়াই করেছিলেন, পরাজিত হলেও এলাকার মানুষের বিপদে পাশে থেকেছেন নানাভাবে। এলাকার মানুষের প্রয়োজনে ৩০ বার রক্ত দিয়েছেন। ফলে মানুষের পাশে আরও ভালোভাবে দাঁড়াতে তিনি লোকসভার লড়াইয়ে শামিল। অধীর স্বর্ণকারের কথায়, মনোনয়ন পত্র পেশ করতে ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হয়েছে। হাতে আছে মাত্র ২৭ হাজার। পাট্টা জায়গায় তাঁর নিজস্ব বাড়ি ছাড়া আর কিছু নেই। ফলে আত্মীয়ের কাছে সাহায্য নিয়ে ভোট প্রচার করবেন তিনি। তিনি কুঠার চিহ্নে দাঁড়াতে চান। যদিও তাঁর প্রতীক এখনও নিশ্চিত হয়নি।