সৈকত মাইতি, তমলুক: ভোট এলেই যেন পাড়ায় পাড়ায় উৎসবের মেজাজ। দলের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ব্যস্ত শাসক কিংবা বিরোধী দলের নেতারা। আর তাতেই নাকি প্রতিনিয়ত বাড়ছে সুরাপানের চাহিদা। বিপিনবাবুর এই কারণ সুধার জোগান দিতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় নেতাদের। আর তাতেই তালে তাল ঢুকে যেন রমরমা কারবার অসাধু মদ বিক্রেতাদের। তা রোখাই বড় চ্যালেঞ্জ আবগারি দপ্তরের। লোকসভা নির্বাচনের সময় তাই মদের কালোবাজারি রুখতে চলছে নাকা তল্লাশি। দফায় দফায় গোপন ঠেকে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মদ বাজেয়াপ্তও করছে আবগারি দপ্তর।
দিনকয়েক আগে ছিল তাপমাত্রার চোখরাঙানি। তাতেই ঝিমিয়ে পড়েছিলেন বিভিন্ন দলের কর্মী-সমর্থকরা। তা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দলের মিটিং- মিছিলের কোনও বিরতি নেই। আর তাতে ভিড় টানার প্রতিযোগিতা সর্বত্র। সুরাপায়ীদের মদের টোপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এই সুযোগে বিক্রির বহর বেড়েছে। তাই দেশি, বিদেশি এবং চোলাই মজুতও বেড়েছে সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকান এবং ঠেকগুলিতে। জলের সঙ্গে মাছের সম্পর্কের মতো ভোটের সঙ্গে নগদ ও সুরার সম্পর্কও যেন নিবিড় হতে শুরু করেছে। আর এই অবস্থায় বেআইনি মজুতদার ও সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নেমেছিল পূর্ব মেদিনীপুর আবগারি বিভাগ।
[আরও পড়ুন: রাহুল নেতৃত্ব ছাড়তে চাইলে আপত্তি জানাবে না লখনউ ম্যানেজমেন্ট! তুঙ্গে জল্পনা]
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বলাইপণ্ডা থেকে ঘাটাল-পাঁশকুড়ার সংযোগকারী জশারে নজরদারি বেড়েছে। দিঘার আশপাশে বিভিন্ন জলপথে চলছে নাকা চেকিং। গোপন ডেরায় হানা দিয়েও উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ সরকারি মদ। কালোবাজারির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫৫জন অসাধু ব্যবসায়ী। উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬৮২ লিটার চোলাই, ৪ হাজার ৮৩৫ লিটার চোলাই তৈরির কাঁচামাল, ১৮২ লিটার ফরেন লিকার।
বাংলা মদ উদ্ধার হয়েছে ২ হাজার ১১২ লিটার, বিয়ার উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৭৭০ লিটার। এছাড়া ওড়িশা থেকে আসা গাড়ি থেকে মদ উদ্ধার হয়েছে আরও প্রায় ৫২ লিটার। লোকসভা নির্বাচনী আবহে মদের কালোবাজারি রুখতে মরিয়া আবগারি কর্তারা। এই দপ্তরের জেলা আধিকারিক মণীশ শর্মা জানিয়েছেন, "ভোটের আগে বেআইনিভাবে বিপুল পরিমাণ মদ মজুত করার অভিযোগে ৫৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিপুল পরিমাণ মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ফলে আমাদের এই অভিযান আগামী সময়ও লাগাতার জারি থাকবে।"