স্টাফ রিপোটার: ম্যাডক্স স্কোয়ার কাণ্ডে যুবক রমিত মণ্ডল খুনের তদন্তে বৃহস্পতিবার তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ৷ ধৃতদের নাম শুভময় জানা, রণদীপ সরকার ও সুরজিৎ টিকাদার৷ আজ পেয়ারাবাগান এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে বালিগঞ্জ থানার পুলিশ৷
পাশাপাশি রহস্য বাড়াল ৯ আর্ল স্ট্রিটের সিসিটিভি৷ ম্যাডক্স স্কোয়ারের উল্টোদিকের এই বাড়িটির সিসিটিভির ফুটেজে ফুটে উঠেছে চিরঞ্জিত্ নন্দীর সাদা রঙের গাড়ির ছবি৷ দেখা গিয়েছে রাস্তার উপর হাঁটাহাঁটি করছেন কয়েকজন যুবক৷ কিন্তু সিসিটিভিতে দেখা যায়নি কোনও বাইকের ছবি৷ কোনও গোলমাল অথবা গাড়ি ভাঙচুরের ছবিও দেখা যায়নি সিসিটিভিতে৷ এ ছাড়াও বিরিয়ানির দোকানে যে চিরঞ্জিতের সাদা গাড়িটি গিয়েছিল, এমন তথ্যও সিসিটিভি-র ফুটেজ থেকে মেলেনি৷ এর পরই ম্যাডক্স স্কোয়ারের কাছে সোনারপুরের যুবক রমিত মণ্ডল খুনের তদন্তে নতুন করে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা৷
প্রথমে পুলিশ জেনেছিল, শুধু পাথর ও ফুটপাথের ‘টাইল’ ছুড়ে ভাঙা হয়েছে গাড়ির কাচ৷ কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতে রমিতের এক বন্ধু পুলিশকে জানান যে, বাইকে করে আসা আততায়ীদের হাতে ছিল বাঁশও৷ এই ‘বাঁশ তত্ত্ব’ও নতুন করে রহস্য সৃষ্টি করেছে৷ পুলিশের মতে, রমিতকে আততায়ীরা চিনত না৷ কিন্তু একইসঙ্গে পুলিশের প্রশ্ন, আততায়ীরা কি গাড়ির মালিক ও চালক চিরঞ্জিত্ নন্দীর পরিচিত?
সোনারপুরের ওই যুবকদের অভিযোগ, গত শুক্রবার গভীর রাতে সোনারপুরের ওই পাঁচ যুবক ম্যাডক্স স্কোয়ারের সামনে গাড়ি নিয়ে আসেন৷ তাঁরা গাড়ির ভিতর বসে বিরিয়ানি খাচ্ছিলেন৷ সঙ্গে ছিল বিয়ারের বোতলও৷ তাঁদের দুই বন্ধু কাছেই একটি ভ্যাটে প্রস্রাব করতে যান৷ তখনই দু’টি বাইকে করে এসে কয়েকজন যুবক তাঁদের কটূক্তি করেন৷ বিষয়টি কেন্দ্র করে তাঁদের বচসা বাধে৷ গাড়ির মধ্যে বসে থাকা অবস্থায় বাইক বাহিনীর ছোড়া ‘টাইল’ মাথায় লাগে ইঞ্জিনিয়ার রমিত মণ্ডলের৷ মঙ্গলবার মৃত্যু হয় তাঁর৷
রমিতের বন্ধু চিরঞ্জিত্ জমির দালালি করতেন৷ তিনি ম্যাডক্স স্কোয়ারের পাশে আর্ল স্ট্রিটের এক প্রোমোটারের অফিসে যে আসতেন, তা স্বীকার করেছেন ওই প্রোমোটারও৷ পুলিশের ধারণা, জমির দালালির সূত্র ধরে দক্ষিণ কলকাতার বহু যুবকের সঙ্গে পরিচয় ছিল চিরঞ্জিতের৷ ওই বাইক বাহিনী চিরঞ্জিতের পরিচিত ছিল এমন সম্ভাবনা পুলিশ উড়িয়ে দিচ্ছে না৷ কোনও পুরনো গোলমাল ঘিরে তাদের মধ্যে কারও সঙ্গেই চিরঞ্জিতের মারপিট ও তারই জেরে রমিতের মৃত্যু হয়, এমন সম্ভাবনাও রয়েছে৷ রমিতের বাবা মনোরঞ্জন মণ্ডল সিবিআই অথবা সিআইডি তদন্ত দাবি করেছেন৷ তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ ছেলের চার বন্ধুর বিরুদ্ধে৷ পরিবারের অভিযোগ, গোলমালকে কেন্দ্র করে কোনও বন্ধুই রমিতের মাথায় আঘাত করেন৷ তাঁরাই নিজেরাই গাড়ির কাচ ভাঙেন৷ তাই বালিগঞ্জ থানায় জমা করা অভিযোগপত্রে মনোরঞ্জনবাবু লিখেছেন, চিরঞ্জিত্ ও সুরজিত্ রাত দু’টোর পর তাঁকে ফোন করে বলে যে, তাঁর ছেলের দুর্ঘটনা হয়েছে৷ তাই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ‘বিষয়টি চক্রান্তমূলক ও পরিকল্পিত৷ এই বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে সিআরপিসি ও আইপিসি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক৷ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক৷’
The post ম্যাডক্স স্কোয়ারে ইঞ্জিনিয়ার খুনে ধৃত ৩ appeared first on Sangbad Pratidin.