ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের নয়া সংশোধনী নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন আগেই। প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই ঘোষণা করেছিলেন, তা লাগু না করার আবেদন জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লিখবেন। কথা রেখে সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) সেই চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাতে সাফ জানালেন, আলু, পিয়াঁজ-সহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির মূল্যবৃদ্ধি রুখতে পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র। নাহলে রাজ্যবাসীর স্বার্থে তা নিয়ন্ত্রণ করতে আইন আনতে বাধ্য হবে রাজ্য।
গত ২২ সেপ্টেম্বর সংসদে পাশ হয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনের সংশোধনী বিল (Essential commodities Amendment law)। তাতে পালটে গিয়েছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ধারণা। এখন থেকে চাল, আলু, পিঁয়াজ, ভোজ্য তেল, ডালের মতো বেশ কয়েকটি দৈনন্দিন খাদ্যসামগ্রী আর অত্যাবশ্যকীয় পণ্য হিসেবে গণ্য হবে না। এর ফলে এই পণ্যগুলি এবার থেকে ইচ্ছেমতো মজুত রাখতে পারবে ব্যবসায়ীরা। মজুত রাখার পাশাপাশি ইচ্ছেমতো দামে এগুলি বিক্রি করা যাবে, এক এলাকা থেকে কিনে অন্য এলাকায় নিয়ে বিক্রিতে কোনও বাধা থাকবে না। এককথায়, এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলির কেনাবেচা এবং মজুতদারির উপর এতদিন যে সরকারি নিয়ন্ত্রণ ছিল, তা পুরোপুরি উঠে যাচ্ছে। আর এখানেই আপত্তি জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি নিয়ন্ত্রণ উঠে যাওয়ার ফলে কালোবাজারির বাড়বাড়ন্তের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। আর সম্প্রতি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীর লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে সেই আশঙ্কারই প্রতিফলন ঘটছে বলে মনে করছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: পুরোদমে শুরু একুশের প্রস্তুতি, ভোটার তালিকা সংশোধনের দিনক্ষণ জানাল নির্বাচন কমিশন]
এই পরিস্থিতিতে এবার প্রধানমন্ত্রীকে চার পাতার চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২০১৪-১৫ সালে এমন মূল্যবৃদ্ধিরন বাজারে রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে যা ছিল, তা প্রয়োগ করে দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে বাঁধতে পেরেছিলেন। কিন্তু নতুন সংশোধনী পাশ হওয়ায় রাজ্য সরকারের সেই আইন প্রয়োগের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, পরিস্থিতি বিবেচনা করে যথাযথ পরিকল্পনা ছাড়াই এই সংশোধনীটি পাশ করানো হয়েছে। আর তার ফলেই এতটা সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘মিথ্যে’ টুইট, হুঁশিয়ারির ২ দিনের মধ্যেই কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে আইনি নোটিস দিলীপের]
এই মুহূর্তে বাজারে আলু, পিঁয়াজের দামে তা কিনতে গিয়ে মধ্যবিত্তের হাতে কার্যক ছ্যাঁকা লাগছে। তাই এই দাম নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র যদি কোনও সদর্থক পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজ্য প্রয়োজনে নতুন করে আইন এনে মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানতে। রীতিমত হুঁশিয়ারির সুরে একথা সাফ মোদিকে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন এই চিঠি পাওয়ার পর কেন্দ্র কী ভূমিকা নেয়, সেদিকে নজর সবমহলের।