ধীমান রায়, কাটোয়া: ‘সোলে’ সিনেমায় বাসন্তীকে বিয়ে করার জন্য জলাধারের ওপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে ‘সুইসাইডে’র ভয় দেখিয়েছিলেন বিরু ওরফে ধর্মেন্দ্র। কার্যত সেরকমই ঘটনা ঘটল কাটোয়ায়। স্ত্রীকে বাড়ি ফেরাতে শ্বশুরবাড়ি এসে তিন তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) যুবক! ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল এলাকায়। বর্তমানে হাসপাতালে ভরতি যুবক।
জানা গিয়েছে, জখম যুবকের নাম প্রদীপ যাদব(২৬)। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা তিনি। শ্বশুরবাড়ি কাটোয়া পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হরিজনপল্লি এলাকায়। ৪ বছর আগে ওই এলাকার কাজল হরিজনের সঙ্গে প্রদীপ যাদবের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন কাজল যাদব হরিজন(২২)। মামাতো বোনের বিয়ে উপলক্ষ্যে কাজল দু’মাস আগে বাপেরবাড়িতে আসেন। কিন্তু তারপর থেকে শ্বশুরবাড়ি যাননি। এদিকে রোজই স্ত্রীকে বাড়ি ফেরানোর জন্য ফোনে অনুরোধ করতে থাকেন প্রদীপ। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
[আরও পড়ুন: পানাভরতি নদীর দু’পাড়ে গাছে দড়ি বেঁধেই ঝুঁকির পারাপার, পঞ্চায়েত ভোটের আগে দাবি সেতুর]
এরপর প্রদীপ নিজেই কাটোয়ায় শ্বশুরবাড়ি চলে আসেন। আশা ছিল, এবার তাঁর সঙ্গে স্ত্রী বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু কাজল নাছোড়বান্দা। জানা যায়, এরপরই স্ত্রীকে রাজি করাতে প্রদীপ আত্মহত্যার চেষ্টা করে। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রথমে বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ দু’জন প্রতিবেশী প্রদীপকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন প্রদীপ জানান, তিনি বিষপান করেছেন। যদিও চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা করে তাঁকে ছেড়ে দেন। এরপর প্রদীপ বাড়ি ফিরে গিয়ে স্ত্রীর সামনেই ছুরি দিয়ে নিজের বুক চিড়ে ফেলে। সন্ধেয় ফের তাঁকে কাটোয়া হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখনও চিকিৎসকরা তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা করে ছেড়ে দেন। কারণ, আঘাত ততটা গুরুতর ছিল না।
দু’বারের চেষ্টায় স্ত্রী রাজি না হওয়ায় বুধবার গভীর রাতে প্রদীপ নিজের গলায় ব্লেড চালিয়ে দেন। রাত প্রায় দেড়টা নাগাদ তাঁকে কাটোয়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন। যদিও এখন কথা বলার মতন পরিস্থিতিতে নেই প্রদীপ। কিন্তু কেন কাজল আর শ্বশুরবাড়ি যেতে রাজি নন? কাজল বলেন, “আমি স্বামীকে বলেছি ও ইচ্ছা করলে কাটোয়ায় থেকে যাক। কিন্তু আমি আর উত্তরপ্রদেশে যেতে চাই না।” চিকিৎসকরা জানান, ওই যুবক যদিও বিপদ্মুক্ত। তবে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতালে অবশ্য স্বামীর শুশ্রূষা করছেন কাজলদেবীই।