সুকুমার সরকার, ঢাকা: রাতের ডিপোয় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়াল বাংলাদেশের (Bangladesh) সীতাকুণ্ডে। রাতভর আগুন আর পরপর বিস্ফোরণের (Blast) জেরে পুড়ে মৃত্যু হয়েছে একে একে ৩৭জনের। যত সময় যাচ্ছে, ততই আরও মৃতদেহ উদ্ধার হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত রয়েছেন ৩ দমকল কর্মী। আহত সাড়ে চারশোর বেশি। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে আহতদের। রবিবার সকালেও কন্টেনারের ডিপোয় আগুন (Fire) জ্বলছে, ভিতর থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের শব্দ। হিমশিম খাচ্ছে দমকল কর্মীরা। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে রাতভর কাজ করে চলেছেন তাঁরা। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন।
ঢাকা (Dhaka)-চট্টগ্রাম (Chittagong) হাইওয়ে সংলগ্ন সীতাকুণ্ডের শীতলপুর এলাকায় একটি বড়সড় কন্টেনার ডিপো অবস্থিত। আমদানি-রপ্তানি করা বিভিন্ন পণ্য এই ডিপোতে রাখা হয়। শনিবার রাত প্রায় ১১ টা নাগাদ এই ডিপোয় আচমকাই আগুন লেগে যায়। সেসময় কাজ করছিলেন অনেকেই। ডিপোর ভিতরে মজুত থাকা দাহ্য পদার্থের জন্য দ্রুত আগুনের লেলিহান শিখা চড়িয়ে পড়তে থাকে। ঘটতে থাকে বিস্ফোরণ। চারপাশের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে দমকল কর্মীরা ছুটে এসে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করেন। একে একে ৩৭ জনের ঝলসানো দেহ উদ্ধার হয় ডিপোর ভিতর থেকে। কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এখনও পর্যন্ত তিন দমকল কর্মীও।
[আরও পড়়ুন: ফের কলকাতার রাস্তায় বেপরোয়া গতি, ডিভাইডারে ধাক্কা দিতেই গাড়ি থেকে ছিটকে পড়লেন যাত্রীরা]
এমন ভয়াবহ ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন পুলিশ ও দমকল বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। কারখানায় ৫০০ মিটারের মধ্যে একটি টিনের শেড রয়েছে। সেখানে প্রচুর পরিমাণে হাইড্রোজেন পারক্সাইড মজুত ছিল বলে জানা যাচ্ছে, যা অতি দাহ্য পদার্থ। সেখানেই প্রথম বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে শেডটি। তবে এখানেই আগুনের উৎস কি না, তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। এমনই জানাচ্ছেন চট্টগ্রামের দমকল বিভাগের ডিজি।
[আরও পড়়ুন: রাষ্ট্রপতি পদে BJP’র মুখ মুখতার আব্বাস নকভি? উপনির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরই জল্পনা]
শনিবার রাতে এই দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে তিন-চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে পরপর বিস্ফোরণে। আশপাশের বাড়ি-ঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। অগ্নিদগ্ধদের জরুরি চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আগুন নেভাতে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা থেকেও দমকলের বিভিন্ন ইউনিট যোগ দিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৪টি ইউনিট কাজ করছে।