অভিরূপ দাস: জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র বের করতে এখনও অব্যাহত দালালরাজ। এবার বরো অফিস থেকে দালাল ধরলেন খোদ কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সেই ব্যক্তিকে।
আগে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্রের জন্য কলকাতা পুরসভায় আসা বাধ্যতামূলক ছিল। মৌচাকের মতো সেখানে ঘুরঘুর করতো দালালরা। আমজনতার অসহায় অবস্থার সুযোগ নিয়ে শংসাপত্র পিছু মোটা টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ বহু পুরনো। তবে এখন দালালরাজ ঠেকাতে জন্মের শংসাপত্র আবেদনের ব্যবস্থা অনলাইনে করে দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কলকাতা পুরসভার নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট বিকল্পে ক্লিক করে জন্মের শংসাপত্রের জন্য আবেদন করা যায় এখন। এমনকি কবে সেই শংসাপত্র হাতে পাওয়া যাবে তার তারিখও দিয়ে দেওয়া হয় সেখানে। নিয়ম অনুযায়ী হাতে শংসাপত্র নেওয়ার সময় অনলাইনে যে নথিগুলি জমা দেওয়া হয় তার আসলটি নিয়ে দেখালেই মেলে শংসাপত্র। যদিও বাস্তবে দেখা গেল অনলাইন পরিষেবা চালু হওয়ার পরেও কমেনি দালালদের দৌরাত্ম্য। গার্ডেনরিচ থেকে হাতেনাতে দালাল ধরে বিস্মিত মেয়র নিজেও।
[আরও পড়ুন: র্যাগিং বন্ধে কড়া আইন আনা উচিত, যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় নিন্দায় সরব সৌরভ]
প্রতি বৃহস্পতিবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বসেন, গার্ডেনরিচ রোডের বরো অফিসে। সম্প্রতি সেখানে মেয়রের শরণাপন্ন হন এক মহিলা। শিশু কোলে সেই মহিলার মেয়রকে কাতর অনুরোধ , “একটু কমিয়ে দিতে বলুন না।” সন্দেহ হওয়ায় ফিরহাদ জিজ্ঞেস করেন, “কিসের কথা বলছেন আপনি?” জিজ্ঞেস করে মেয়র জানতে পারেন ওই মহিলার তিনটি বাচ্চা। জন্মের শংসাপত্র জোগাড় করে দেওয়ার জন্য বাচ্চাপিছু ৬ হাজার টাকা করে চাইছেন কেউ।
মেয়রের বক্তব্য, “এখন জন্মের শংসাপত্রের জন্য এক টাকাও লাগে না। কিন্তু গরিব মানুষ অনলাইনের বিষয়টি জানে না। অসাধুচক্র সেই সুযোগে ঠকাচ্ছে।” সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় পশ্চিমবন্দর থানায় খবর দেন মেয়র। পুলিশ আসে বরো অফিসে। দালালকে বমালসমেত ধরার জন্য নিরাপত্তারক্ষীর হাতে টাকা দিয়ে পাঠান মেয়র। টাকা নিতে গেলেই আটক করা হয় ওই দালালকে। ফিরহাদ জানিয়েছেন, পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে অভিযুক্তকে।