shono
Advertisement

চিন থেকেই আসে ৭০% কাঁচামাল, সীমান্তে যুদ্ধের আবহে চিন্তায় দেশের ওষুধ সংস্থাগুলি

দেশে তৈরি হতে পারে তীব্র ওষুধ সংকট! The post চিন থেকেই আসে ৭০% কাঁচামাল, সীমান্তে যুদ্ধের আবহে চিন্তায় দেশের ওষুধ সংস্থাগুলি appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 11:21 AM Jun 20, 2020Updated: 11:23 AM Jun 20, 2020

গৌতম ব্রহ্ম: প্যারাসিটামল থেকে অ্যাজিথ্রোমাইসিন, বেদনানাশক থেকে অ্যান্টিবায়োটিক, ভারতে উৎপাদিত ওষুধের ৭০ শতাংশ কাঁচামালের জোগানদার চিন। তাই গালওয়ানের (Galwan Valley) তিরে যুদ্ধের দামামা বাজতেই বুক ঢিপঢিপ ভারতের ওষুধ নির্মাতাদের। তাঁদের বক্তব্য, চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বন্ধ হলে প্রবল বিপাকে পড়বে দেশের ওষুধশিল্প। তৈরি হবে তীব্র ওষুধ সংকট।

Advertisement

ইন্দো-চিন (Indo-China) সম্পর্ক তিক্ত হতেই দেশজুড়ে চিনা পণ্য বয়কটের ডাক উঠেছে। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি যে আলাদা তা মনে করিয়ে দিয়েছেন ওষুধ নির্মাতারা। তাঁদের মত, চাইলেও ভারতের পক্ষে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করা মুশকিল। তাহলে ওষুধ-সহ অনেক শিল্পই মুখ থুবড়ে পড়বে। এমনটাই জানিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান ড্রাগ ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন’ (ইডমা)।

ওষুধশিল্প দু’রকমের। ট্যাবলেট, ক্যাপসুল, সিরাপ উৎপাদন করে ফর্মুলেশন ইন্ডাস্ট্রি। কাঁচামাল বা বাল্ক ড্রাগ ‘অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস’ (এপিআই) ইন্ডাস্ট্রি। ওষুধ বানানোর জন্য ব্যবহৃত এপিআইয়ের সিংহভাগ আমদানি করতে হয়। ইডমা-র সদ্য প্রাক্তন জাতীয় সভাপতি দীপনাথ রায়চৌধুরি বলেন, “এই আমদানির ৭০ শতাংশ আসে চিন থেকে। যার বাৎসরিক অর্থমূল্য প্রায় ১৮-২০ হাজার কোটি টাকা। এই ‘ক্রিটিক্যাল ওভার ডিপেডেন্স অন চাইনিজ এক্সপোর্ট’ নিয়ে আমরা সরকারকে অনেকদিন ধরেই সতর্ক করেছি।”

ভারত একসময় এপিআই তৈরিতে স্বনির্ভর ছিল। কিন্তু গত পঁচিশ বছরে চিন এই শিল্পে এতটাই এগিয়েছে যে বাকিরা সবাই দামযুদ্ধে হেরে ময়দান ছেড়েছে। পরিবেশ দূষণের কারণেই এপিআই শিল্প থেকে সরে আসছে ইউরোপ। ফার্মান্টেশন প্রোডাক্টও এখন চিন তৈরি করছে। এমনটাই জানিয়েছেন ‘সোসাইটি ফর সোশ্যাল ফার্মাকোলজি’র সম্পাদক ডা. স্বপন জানা। তাঁর পর্যবেক্ষণ, এপিআই বা বুনিয়াদি ওষুধ ও ওষুধকে ফর্মুলেশন বানানোর রাসায়নিকের সিংহভাগ চিন থেকে আসে। সুতরাং চিনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা অসম্ভব।

[আরও পড়ুন: ‘আমরা প্রস্তুত, বীর শহিদদের বলিদান ব্যর্থ হতে দেব না’, হুংকার বায়ুসেনা প্রধানের]

ভারত সরকারও বুঝতে পেরেছে, এতটা চিন নির্ভরতা জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষার পরিপন্থী। তাই দু’টি প্রকল্প এনেছে। ৬৯৪০ কোটি টাকার ‘প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেনটিভ স্কিম’ (পিএলআই স্কিম)। আর বাল্ক ড্রাগ পার্কের জন্য প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা। আসলে অনেক নিয়ম-কানুন ও দূষণবিধি মেনে ওষুধ উৎপাদন করতে হয়। ‘অ্যাফ্লুয়েন্ট প্লান্ট’ তৈরি করতে হয়। পার্ক তৈরি হলে একটা ‘কমন অ্যাফ্লুয়েন্ট প্লান্ট’ সবাই ব্যবহার করতে পারবে। ফলে, খরচ অনেক কমবে। কিন্তু এগুলি সবই পরিকল্পনার কথা। ভারত সরকারও জানে, তিন লক্ষ কোটি টাকার ভারতীয় ওষুধ শিল্প চিন ছাড়া চলবে না। এই চিন নির্ভরতা বিপজ্জনক। দীপনাথবাবু জানিয়েছেন, ডোকালামের সময়ও ওষুধশিল্পে উদ্বেগ তৈরি হয়েছিল। তবে এবার বেশি।

এবার আসি ওষুধ রপ্তানির কথায়। ২০০ দেশে ভারত ওষুধ রফতানি করে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি হলে এই রপ্তানি শিল্পও মার খাবে। এখন ভারতের ওষুধ নির্মাতাদের ভাড়ারে যা কাঁচামাল রয়েছে তাতে বড়জোর মাস তিনেক চলবে। কিন্তু, তার পর? অনেকেই দাম বাড়ানোর কথা বলছেন। কিন্তু সেটা হওয়া মুশকিল। ওষুধশিল্পের উপর সরকারের অত্যধিক নিয়ন্ত্রণ। সরকার না চাইলে দাম বাড়বে না। কিন্তু কাঁচামাল না থাকলে ওষুধই তো তৈরি হবে না।

এখন যতটুকু এপিআই তৈরি হয় তা গুজরাত, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানায়। পূর্ব ভারতে কোনও এপিআই শিল্প নেই। করোনা সংক্রমণ ও চিনা নববর্ষ উদযাপনের জন্য কিছুদিন চিন থেকে এপিআই আসা বন্ধ ছিল। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে ফের পণ্য পরিবহণ শুরু হয়েছে। এখন চিন থেকে নিয়মিত পণ্য আসছে। সুতরাং, ভারত সরকারের পক্ষে চিনা পণ্যে সার্বিকভাবে বিধিনিষেধ আরোপ করা মুশকিল।

[আরও পড়ুন: মানুষের অত্যাচার থেকে বাঁচাতে হাতিদের গলায় পরানো হবে রেডিও কলার]

The post চিন থেকেই আসে ৭০% কাঁচামাল, সীমান্তে যুদ্ধের আবহে চিন্তায় দেশের ওষুধ সংস্থাগুলি appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement