বাবুল হক, মালদহ: আবারও গণধর্ষণের অভিযোগকে ঘিরে উত্তাল হল মালদহ। মানসিক অবসাদগ্রস্থ এক বালিকাকে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের গোপন ডেরায় গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনা কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের বাঙ্গিটোলা অঞ্চলের। যার জেরে মোথাবাড়ি এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। নিগৃহীতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের বাঙ্গিটোলা অঞ্চলের এক গ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই বালিকাকে বুধবার রাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের লোকজন সারারাত তাঁকে খোঁজেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে, গ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিতর অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। গ্রামবাসীরা ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। পরে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয় তার। গোটা ঘটনায় মোথাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।
[আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে পড়তে গিয়ে খুন! বাংলার ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় অবশেষে গ্রেপ্তার হস্টেল মালকিন-সহ ৪]
ঘটনায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বালক ব্রহ্মচারী গঠিত সন্তান দলের পক্ষ থেকে প্রকৃত দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি উঠেছে। সন্তান দলের উত্তরবঙ্গ কমিটির সঞ্জীব দাস বলেন, “আমাদের রাজ্যে ধর্ষকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তাই আমরা মুখমন্ত্রীর কাছে এই ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।” বাঙ্গিটোলা অঞ্চলের প্রধান মহিদুর শেখ জানিয়েছেন, “এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা খোঁজ নিচ্ছি কে বা কারা এর পিছনে রয়েছে। পুলিশকেও এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে বলা হয়েছে।”
এদিকে ধর্ষিতার মায়ের দাবি, তাঁর মেয়েকে বুধবার রাত থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরের দিন সকালে গ্রামেরই প্রাইমারি স্কুলের ভিতরে থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর সন্দেহ তিন-চারজন মিলে ধর্ষণ করা হয়েছে। দোষীদের ফাঁসি দাবি জানিয়েছেন অসহায় মা। যে বিদ্যালয় এই ঘটনা ঘটেছে, তার প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন, বিদ্যালয় ছুটির পর তালা পড়ে যায়। বৃহস্পতিবার স্কুলে এসে এই ঘটনাটি জানতে পারেন তাঁরা। শুক্রবার বিদ্যালয়ে পুলিশ আসে। তাঁর অনুমান, পাঁচিল টপকে ওই কিশোরীকে ভিতরে নিয়ে এসে এই ঘটনা ঘটায় অভিযুক্তরা।
নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা দেখা করতে বাঙ্গিটোলা ছুটে যান মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। জানান, পুলিশকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের উপর আস্থা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। যদিও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।