অর্ণব আইচ: আর জি কর হত্যাকাণ্ডে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে। গ্রেপ্তারির পর তাঁর কীর্তি প্রকাশ্যে আসতেই চক্ষু ছানাবড়া সকলের। জানা গিয়েছে, একটা-দুটো নয়, পাঁচটা বিয়ে করেছিল সে। বিয়ে করাটা নেশার মতো হয়ে গিয়েছিল সঞ্জয়ের। প্রতিবেশীরা জানান, প্রথমে বেহালার এক তরুণীকে বিয়ে করে সে। এর পর পার্কসার্কাস, বারাকপুর, আলিপুরের আরও তিন তরুণীকে সে বিয়ে করে। কিন্তু প্রত্যেক বিয়ের পরই বাড়ির ভিতর থেকে চেঁচামেচির শব্দ আসত।
জানা গিয়েছে, স্ত্রীদের উপর অত্যাচার চালাত সঞ্জয়। এর পর ছাড়াছাড়ি হয়ে যেত। আলিপুরের মহিলা পরিচালিত পেট্রোল পাম্পের এক কর্মীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার পর তাঁকেও বিয়ে করে সঞ্জয়। চতুর্থ স্ত্রী তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলা চালাতে নিজের বাইক বিক্রি করতে হয় সঞ্জয়কে। গত ডিসেম্বরে বিয়ে করে শান্তিকে। কিন্তু জানত না যে, পঞ্চম স্ত্রী ক্যান্সারে ভুগছেন। বিয়ের দু’মাস পরই গত ফেব্রুয়ারিতে শান্তির মৃত্যু হয়। এর পর থেকে আর বাড়িতে রাত কাটাত না সে। প্রভাব খাটিয়ে থাকত চতুর্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে।
[আরও পড়ুন: হাইওয়েতে আছড়ে পড়ল বিমান! ব্রাজিলে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত ৬১]
দক্ষিণ কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালের অদূরে শম্ভুনাথ পন্ডিত রোডের ঠান্ডিগলিতে পুরনো দোতলা বাড়ির একতলায় একচিলতে ঘরে থাকেন মালতী রায়। সঞ্জয় তাঁরই ছেলে। খুন ও ধর্ষণের অভিযোগে সঞ্জয়ের গ্রেপ্তারির খবর শনিবার সকালেই এসে পৌঁছয় মায়ের কাছে। মায়ের দাবি, ‘‘আমার ছেলে ধর্ষণ, খুন কোনওটাই করতে পারে না।’’ সঞ্জয় মাকে জানিয়েছিল, সে পুলিশে কাজ করে। যদিও বাড়িতে বা পাড়ায় কোনওদিন ইউনিফর্ম পরে আসেনি সে। কিন্তু এলাকায় তার রোয়াব কম ছিল না। ভবানীপুরেরই একটি স্কুল থেকে প্রাথমিক পাস করার পর মাধ্যমিক পাস করে অন্য স্কুল থেকে। এর পর পদ্মপুকুর এলাকার একটি স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে সে। স্কুলে পড়াশোনা চলাকালীন সে এনসিসিতে যোগ দিয়েছিল।
যদিও এর পরই শেষ হয়ে যায় পড়াশোনা। কলেজে ভর্তি হয়নি। এলাকায় রাজনীতি করত। আর ভবানীপুরেরই একটি নামী ক্লাবে বক্সিং শিখত। প্রতিবেশীদের দাবি, রাজনীতি ও বক্সিং জানার সুবাদে ২০১৯ সালে সে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে যোগ দেয়। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, ডিএমজিতে যোগ দিলেও ডেপুটেশনে তাকে কলকাতা পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটিতে পাঠানো হয়। সেখানেই সে হাসপাতাল সংক্রান্ত কাজ করতে শুরু করে। তার এক দিদির মৃত্যু হয়েছে। অন্য দুই বোনের মধে্য একজন সিভিক ভলান্টিয়ার, অন্যজন পুলিশকর্মী।