বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে বিধায়ক মুকুল রায়ই (Mukul Roy)। বিজেপির তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও এই কমিটির ২০ জন সদস্যের তালিকায় নাম আছে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়কের। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীও গতকাল একপ্রকার চ্যালেঞ্জের সুরে জানিয়ে দিয়েছেন, মুকুলকেই PAC চেয়ারম্যান পদে সমর্থন করবে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে সদ্য বিজেপি ত্যাগী মুকুলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত বলেই মনে করছে তৃণমূল।
আগামী ২ জুলাই বসবে বিধানসভার (West Bengal Assembly) বাজেট অধিবেশন। ৭ তারিখ বাজেট পেশ করবেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র (Amit Mitra) অসুস্থ থাকায় সরকারপক্ষের এই সিদ্ধান্ত। তার আগে সোমবারের মধ্যে বিধানসভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক একাউন্টস কমিটির নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরেই শাসক ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। প্রথম থেকেই এই কমিটির চেয়ারম্যানের পদ দাবি করে আসছে বিরোধীরা। সাধারণত রীতি অনুযায়ী বিরোধীদের হাতে এই কমিটির দায়িত্ব থাকলেও চেয়ারম্যান কে হবেন স্পিকারের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। বৃহস্পতিবার পিএসি-তে মুকুলের মনোনয়নের বিরোধিতা করে চিঠি দেয় BJP পরিষদীয় দল। দলের দুই বিধায়কের দাবি, নিয়মানুযায়ী এই কমিটির জন্য সরকারপক্ষের ১৪জন ও বিরোধীদের ৬জন বিধায়ক মনোনয়ন জমা দেন। তাঁদের পক্ষ থেকে যে ৬ জনের নাম দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়ের নাম নেই। কে বা কারা তাঁর নামে মনোনয়ন জমা দিয়েছে তা জানাতে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘মুকুল রায় তো BJP সদস্য’, PAC চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন নিয়ে মন্তব্য মমতার]
কিন্তু সন্ধ্যায় বিধানসভার সচিবালয় PAC-র যে তালিকা প্রকাশ করে, সেখানে মুকুলের নাম রয়েছে। অর্থাৎ বিজেপি-র দাবি খারিজ করে মুকুলের মনোনয়নকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। TMC শিবিরের মতে, মুকুলের পিএসি চেয়ারম্যান পদে বসা কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা। কারণ, পিএসি-র জন্য মোট ২০ জন সদস্যের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে বিধানসভার তরফে। বিজেপি-র ৬ জন, তৃণমূলের ১৩ জন এবং মুকুল রায় মনোনয়ন দাখিল করেছেন। ২০ জনের কমিটিতে ২০টি বৈধ মনোনয়ন জমা প়ড়ায় নির্বাচনের আর কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই স্পিকার নিজের ক্ষমতা প্রয়োগ করে মুকুলকে ওই পদে বসাতে পারেন।
[আরও পড়ুন: ‘লোকাল ট্রেন চালু হলে ফের সংক্রমণ ছড়াবে’, আশঙ্কায় রেলের আবেদন খারিজ মুখ্যমন্ত্রীর]
বিজেপির পরিষদীয় দল অবশ্য বিষয়টি নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এর শেষ দেখে ছাড়বো বলে হুমকিও দিয়ে রেখেছেন। ঠিক তখনই অনেকটাই সুর নরম করেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তিনি জানান, “পিএসি চেয়ারম্যান বিরোধী দলের থেকে দেওয়াটা রীতি। সরকার যদি না দেয় তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। সংবিধানেও কিছু বলা নেই। তবে আমাদের অনেক যোগ্য লোক আছেন ওই পদের জন্য।” এ প্রসঙ্গে অশোক লাহিড়ীর কথাও বলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি।