সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আর কয়েকদিনের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। রবিবার আলিগড়ে নির্বাচনী প্রচারে বক্তৃতা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুরু থেকেই কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। এছাড়া কংগ্রেস-সমাজবাদী পার্টির জোট নিয়েও মুখ খোলেন। বলেন, ‘যখন ঝড়ের বেগ বেশি হয়, তখন প্রত্যেকেই আশ্রয় খোঁজেন। এবার কিন্তু বিজেপির ঝড়ের বেগ বেশি। আর এখানকার মুখ্যমন্ত্রী তো ঝড় হলেই কাউকে না কাউকে আঁকড়ে ধরেন। উড়ে যাওয়ার ভয়ে। কিন্তু এবারের ঝড় আর তাঁকে টিকতে দেবে না। কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি ভয়ে এক হয়েছে।’ এর পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে যে কোনওরকম উন্নয়ন হয়নি সেকথাও বলতে ভোলেননি। রাজ্যের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে একদিনে ৭৬৫০টি অপরাধ, ২৪টি ধর্ষণ, ১৩টি খুন, ৩৩টি অপহরণ, ২১টি ধর্ষণের চেষ্টা, ১৯টি দাঙ্গা এবং ১৩৬টি চুরির ঘটনা ঘটে।’
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক আর কী কী বললেন মোদি:
- আলিগড়ের বিখ্যাত তালা সেখানকার কারখানাগুলোকে বন্ধ করতেই কাজে লেগেছে। কারণ এই সরকার সেগুলিতে বিদ্যুতের জোগান দিতে পারছে না।
- ওনাদের এখন মনে হচ্ছে ৭০ বছর ধরে যে পাপ করেছেন, তার হিসেব দিতে হবে। কেউ তো এসেছে যে হিসেব চাইছে।
- আমরা আধার এবং জনধনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে টাকা দেওয়া শুরু করেছি আর যে ৪০ হাজার কোটি টাকা ইঁদুরে খেয়ে নিত, সেটা বাঁচিয়ে দিয়েছি।
- বিদ্যুৎ মাঝেমধ্যে আসে, যখন আসে তখন লোকজন আনন্দে মেতে ওঠে।
- আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছি যাতে গরিব মানুষ এবং যুবকরা তাঁদের নিজেদের অধিকার ও টাকা থেকে বঞ্চিত না হন।
- আমার কাছে ‘বিকাশ’ শব্দটির অর্থ বিদ্যুৎ, আইন, সড়ক।
- আমি উত্তরপ্রদেশ সরকারকে বারবার বলেছি দুর্নীতির দরজা বন্ধ করতে। কিন্তু এর জন্য সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার প্রয়োজন।
- যেসমস্ত রাজনৈতিক নেতারা সমাজবিরোধীদের আশ্রয় দেয়, তাঁদের সরিয়ে দিন। দেখবেন তাহলে সমাজে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে আর কোনও সমস্যা হবে না।
- গত ৭০ বছর ধরে ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুতের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি, বেশিরভাগই উত্তরপ্রদেশের গ্রাম। আমরা বিদ্যুতায়নের কাজ যত দ্রুত সম্ভব শেষ করার চেষ্টা করব।
- আমাদের লক্ষ্য ভারতের গ্রামগুলিকে ধোঁয়া মুক্ত করে তোলা। এজন্য উজ্জ্বলা যোজনা চালু করা হয়েছে। গরিবদের রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।
- উত্তরপ্রদেশের কেলেঙ্কারি চাই না, সাফল্য চাই।
- যতদিন কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ছিল বিআর আম্বেদকরকে ‘ভারতরত্ন’ উপাধি দেওয়া হয়নি। তাই কংগ্রেসের ওনার নাম নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।
এদিকে, শাহারানপুরে নির্বাচনী প্রচারে এসে পাল্টা মোদির সমালোচনা করেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী। পাশাপাশি সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে সপা’র জোটের পক্ষেও সওয়াল করেন। বলেন, ‘মোদিজি প্রথমে স্যুট পরতেন, কিন্তু আমি সংসদে স্যুট-বুটের সরকার নিয়ে কথা বলার পর তিনি আর স্যুট পরেন না। বিহার থেকে মোদিজিকে যেরকম ভাবে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেরকমভাবে উত্তরপ্রদেশ থেকেও ফেরত পাঠাতে হবে। ওই জন্যই তিনি এখন আর বিহারের কথা বলেন না। আমাদের দু’জনের মধ্যে পার্থক্য একটাই একজন দিবাস্বপ্নের কথা বলেন, একজন সংকল্পের কথা বলেন।’