সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহাকাশে মহাযুদ্ধ। জটায়ু তথা লালমোহন গাঙ্গুলি এই মুহূর্তে চিনের সঙ্গে আমেরিকার ‘স্পেস রেস’ নিয়ে লিখতে বসলে সেই লেখার শিরোনাম এমনটা হতেই পারত। সত্যি সত্যিই গত শতকের পাঁচ ও ছয়ের দশক জুড়ে মহাকাশে সোভিয়েত (আজকের রাশিয়া) ও আমেরিকার (US) রীতিমতো শেয়ানে শেয়ানে টক্করের কথা সকলের জানা। তারপর এতগুলি দশক ধরে কার্যত রাজত্ব করছে NASA। কিন্তু এবার সেই একচ্ছত্রাধিপত্যে ভাগ বসাতে হাজির হয়ে গিয়েছে চিন (China)। আর তাই মহাকাশে মৌরসিপাট্টা বজায় রাখা নিয়ে রীতিমতো শঙ্কিত নাসা।
কোনও এলোমেলো সূত্র নয়, খোদ নাসার প্রশাসনিক কর্তাই এমনটা জানিয়েছেন। ২০২৪ সালে চাঁদে (Moon) আবারও মানুষ পাঠাচ্ছে আমেরিকা। কিন্তু ওই দুই মার্কিন মহাকাশচারীর আগেই বেজিং চাঁদে মানুষ পাঠিয়ে বসবে না তো? নাসার বিল নেলসন জানিয়েছেন, ‘‘আপনারা সকলেই শুনেছেন চিন সরকার জানিয়ে দিয়েছে, চাঁদে মানুষ পাঠানোর বিষয়ে তারা আর ২০৩০ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি নয়।’’ তাঁর মতে, ২০২৪ সালে চাঁদে দুই মার্কিন নভোচরকে পাঠানো নিয়ে আমেরিকাকে প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়তে হতেই পারে। আর তাই তাঁরাও তাঁদের অভিযানের সময় এগিয়ে আনতে পারেন। প্রসঙ্গত, শেষবার গত শতাব্দীর সাতের দশকে শেষবার চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছিল নাসা।
[আরও পড়ুন: বিশ্বের প্রথম কাঠের তৈরি স্যাটেলাইট, চলতি বছরেই পৌঁছবে পৃথিবীর কক্ষে]
কিন্তু হঠাৎ কী করে এতটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠল বেজিং? আসলে গত ফেব্রুয়ারিতেই মঙ্গলের কক্ষপথে ঢুকে পড়েছে চিনা মহাকাশযান তিয়ানওয়েন-১। এখানেই শেষ নয়। গত ১৪ মে লাল গ্রহের মাটিতে নেমেও পড়েছে চিনা রোভার। প্রথম মঙ্গল অভিযানের এই সাফল্যই চিনকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। এদিকে রাশিয়ার (Russia) সঙ্গে হাত মিলিয়ে আন্তর্জাতিক লুনার স্টেশন গড়ে তুলতে চাইছে। পুতিনের দেশের সঙ্গে এই অংশীদারিও বেজিংয়ের আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার আরেক কারণ।
আর সেই কারণেই তাদের অভিযান এগিয়ে আনার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করতে শুরু করেছে আমেরিকা। কবে চাঁদে মহাকাশচারী পাঠাতে চাইছে নাসা? বিল নেলসন তা বলেননি খোলসা করে। কেবল জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের প্রতিযোগীদের আগে।’’ সেই সঙ্গে ইঙ্গিত করেছেন, ২০২২ অর্থবর্ষের জন্য ২৪.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করার অনুরোধ জানিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। তাহলে কি আগামী বছরেই চাঁদে ফের মানুষ পাঠাতে পারে আমেরিকা? আপাতত সবটাই জল্পনা। তবে চিনের সঙ্গে আমেরিকার টক্কর নিয়ে আর কোনও জল্পনা নেই। তা একেবারে নিখাদ বাস্তব।