সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চন্দ্রাভিযান কি শুধুই তার রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে কিংবা খ্যাতি অর্জনের স্বার্থে? এর সঙ্গে যে বাণিজ্যিক যোগ আছে, তা আজ আর কারও অজানা নয়। তবে নাসার (NASA) নয়া ঘোষণা সেই বাণিজ্যিক যোগকেই আরও নিবিড় করে তুলল। এবার থেকে চাঁদের খনিজ কেনার সিদ্ধান্ত নিল নাসা। তার জন্য বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সেখানে খননকাজের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। যা খনিজ মিলবে, তার সবটাই কিনে নেবে নাসা। কার্যত একাই চন্দ্রপৃষ্ঠের খনিজ সম্পদের মালিক হয়ে যাবে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
নাসার কর্ণধার জিম ব্রিডেনস্টাইন দিন দুই আগে একটি ব্লগ লিখে জানিয়েছেন যে তাঁদের এই পরিকল্পনা ভবিষ্যতের মহাকাশচারীদের অনেক সাহায্য করবে। একদম প্রত্যক্ষভাবে তাঁরা চাঁদ সম্পর্কে জানার সুযোগ পাবেন ওই খনিজ সামগ্রী দেখে। ১৯৬৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী, মহাজাগতিক কোনও সামগ্রীর মালিকানা পৃথিবীর কারও হতে পারে না। নাসার ঘোষণায় এই চুক্তিও লঙ্ঘন হচ্ছে না বলে দাবি ব্রিডেনস্টাইনের। যেহেতু উত্তোলিত সমস্ত খনিজ অর্থ দিয়ে কেনা হচ্ছে, তাই তার মালিকানাও দাবি করতে পারবে নাসা। এই কাজের জন্য ইতিমধ্যেই বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে খননকাজ হবে। এইভাবে মহাকাশ গবেষণায় বেসরকারি উদ্যোগকে আরও স্বাগত জানাতে চাইছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। ব্রিডেনস্টাইনের কথায়, ”আসলে চাঁদের মাটি আমরা সম্পদ হিসেবে রাখতে চাই। শুধু তাইই নয়, বরফ এবং আরও যা কিছু বেরিয়ে আসবে খননে, সবই কিনব।”
[আরও পড়ুন: ফের অভিযানে ‘কল্পনা চাওলা’! তাঁর নামাঙ্কিত মার্কিন মহাকাশযান শূন্যে পাড়ি দিচ্ছে শীঘ্রই]
জানা গিয়েছে, রোবট পাঠিয়ে হবে খননকাজ। এছাড়া আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চাঁদের মাটিতে আণবিক চুল্লি বসানোর পরিকল্পনা করেছে নাসা। তার জন্যও খননকাজ প্রয়োজনীয়। কারণ সেখানকার খনিজকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেই চলবে আণবিক চুল্লিগুলো। যাতে পরবর্তী সময়ে চন্দ্রাভিযানের প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৃথিবী থেকে নিয়ে যেতে না হয় এবং কাজের জন্য অনির্দিষ্টকাল ধরে চন্দ্রপৃষ্ঠে থাকতে পারেন অভিযাত্রীরা। আর এসবের ফাঁকেই খনিজ সামগ্রী নাসা নিজের সম্পত্তি করে নিতে চাইছে।
[আরও পড়ুন: কৃত্রিম আলোর দাপটেই বাড়ছে অতিমারীর প্রকোপ! গবেষণায় দাবি বাঙালি বিজ্ঞানীর]
‘জার্নাল অফ স্পেস ল’র (Journal of Space Law) প্রাক্তন সম্পাদক জোয়ান গ্যাব্রিনোইজের মতে, নাসা বেসরকারি সংস্থাগুলোতে বিনিয়োগ করবে। হিসেবমতো, খননকাজে উঠে আসা সামগ্রীর মালিক হতে পারে সেসব সংস্থাই। কিন্তু নাসা তাদের থেকে সেই জিনিস কিনে নেবে। ফলে মালিকানা আর ওই সংস্থার থাকবে না। তাই নাসার এই প্রস্তাবে সায় দেওয়ার আগে সংস্থাগুলোকে বেশ কয়েকটি বিষয় আগে থেকে ভেবেচিন্তে তবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
The post চাঁদের সম্পত্তিতে হাত বাড়াচ্ছে নাসা, খনিজ উত্তোলনের জন্য চলছে খননকারীর খোঁজ appeared first on Sangbad Pratidin.