ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ডিএ (DA) আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি (Nawsad Siddique)। শনিবার ধর্মতলায় সরকারি কর্মীদের যৌথ মঞ্চে অনশনে বসেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক। দুপুরে তিনি বক্তব্য রাখতে ওঠেন মঞ্চে। সেসময়ই তাঁর সামনে এসে এক ব্যক্তি তাঁকে ধাক্কা মারে। শোরগোল পড়ে যায় মঞ্চে। কিন্তু আক্রমণের মুখে পড়েও ‘গান্ধীগিরি’ দেখালেন নওশাদ। হামলাকারীকে পালটা মারে বাধা দিলেন তিনি। তবে ওই যুবক কেন আচমকা ভাঙড়ের বিধায়ককে ধাক্কা দিলেন, তা এখনও জানা যায়নি। পরে রাতে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাওয়ার দাবিতে ৫১ দিন ধরে ধর্মতলায় (Dharmatala)শহিদ মিনারে আন্দোলন চালাচ্ছে সরকারি কর্মীদের একাংশ। শনিবার সকালে সেই মঞ্চে পৌঁছে যান ভাঙড়ের আইএসএফ (ISF) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনিও সূর্যাস্ত পর্যন্ত উপবাস করার কথা বলেন। সারাদিন মঞ্চেই ছিলেন নওশাদ। দুপুর গড়াতেই বাঁধল বিপত্তি। হামলার মুখে পড়লেন তিনি।
[আরও পড়ুন: আদালতের পথে ইমরান খানের কনভয়ে দুর্ঘটনা, ছড়াল চাঞ্চল্য]
দুপুর নাগাদ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চে উঠে বক্তব্য রাখছিলেন নওশাদ সিদ্দিকি। জনগণের জন্য কাজের কথা বলছিলেন তিনি। আচমকাই এক যুবক তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন। নওশাদকে প্রশ্ন করেন, ”আপনি সংখ্যালঘুদের জন্য কী করেছেন?” তাতে নওশাদ ভালভাবেই উত্তর দেন, ”আলাদা করে সংখ্যালঘুদের জন্য কিছু বলছি না, সকলের জন্যই বলছি।” এরপরই যুবক ক্ষুব্ধ হয়ে একেবারে সামনে থেকে নওশাদকে ধাক্কা দেন। সঙ্গে সঙ্গে নওশাদকে ঘিরে থাকা ব্যক্তিরা সকলে রে রে করে তেড়ে যান। কিন্তু তাঁদের আটকে নওশাদ বলতে থাকেন, ”ওঁকে কিছু করবেন না।” যদিও তারপরও বিধায়কের (MLA) সুরক্ষার কথা ভেবে তাঁর কথা অমান্য করেই হামলাকারী ওই যুবককে আন্দোলনস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয়। শোনা যাচ্ছে, ওই যুবক বাঁকড়ার বাসিন্দা, ইউটিউবার পরিচয় দিয়ে আন্দোলনস্থলে ঢুকেছিল।
[আরও পড়ুন: আসানসোল কম্বল কাণ্ড: নয়ডা থেকে গ্রেপ্তার BJP নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি]
পরে নওশাদ বলেন, “পরিকল্পনা করে এই আন্দোলনটাকে ভুলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছিল। ধন্যবাদ, যাঁরা আছেন এখানে, সকলেই শিক্ষিত মানুষ। তাঁকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। পুলিশের এখন কাজ সত্যটা জনমানসে আনা। কে এসেছিল, কেন এসেছিল সেটা সকলের সামনে আনা দরকার। এই মঞ্চকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব পুলিশের। কোর্ট থানাকে বলে দিয়েছে। দুঃখের বিষয় নিরাপত্তায় নিশ্চয়ই গাফিলতি আছে। সে জন্য এরকম হচ্ছে। আশা করছি, আগামিদিনে নিরাপত্তা বাড়ানো হবে। তেমনটা না হলে আদালতের কাছেই প্রশাসনকে জবাবদিহি করতে হবে।”
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) প্রতিক্রিয়া, ”এই ধরনের চড় বা শারীরিক হেনস্থা সমর্থন করি না। এটা সুস্থ রাজনীতি নয়। তবে এই মঞ্চ নাটকের মঞ্চ হয়েছে। নাটকের কোন অঙ্কে কে কি অভিনয় করছে সেটা বলা মুশকিল। এই চড় কাণ্ডের পেছনে যে ঘটনা আছে বলা হচ্ছে। তবে ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করছেন তাঁরা।”