অর্ণব দাস, বারাসাত: নিমতার (Nimta) সেই ‘আক্রান্ত’ বৃদ্ধার মৃত্যু হল। রবিবার গভীর রাতে নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। এই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলে সুবিচারের দাবি জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও তৃণমূলের (TMC) দাবি, ওই বৃদ্ধা অসুস্থ ছিলেন, তাই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এর পিছনে কোনও ভাবেই জড়িত নয় তৃণমূল। উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে ঢুকে বিজেপি কর্মীর মাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল সদস্যদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। টুইটারে লেখেন, “বাংলার মেয়ে শোভা মজুমদারের মৃত্যুতে শোকার্ত।তৃণমূলের গুন্ডাদের মারে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই পরিবারের দুঃখ, ব্যথা মমতা দিদিকে দীর্ঘদিন ভাবাবে।”
উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ ওই আক্রান্ত বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও অর্জুন সিং। তার পরই বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় শোভা মজুমদার নামের ওই বৃদ্ধাকে। সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতিও হয়। দিন চারেক আগে বাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি। এর পর রবিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। স্বভাবতই দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে ‘তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত’ বৃদ্ধার মৃত্যু ঘিরে ফের উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি।
[আরও পড়ুন : ভোটের মরশুমে ফের বাসন্তীতে শুটআউট, গুলিবিদ্ধ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য]
ইতিমধ্যে উত্তর দমদমের বিজেপি প্রার্থী অর্চনা মজুমদার ওই বৃদ্ধার বাড়িতে যান। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং বৃদ্ধার মৃত্যুর সুবিচার দাবি করেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপির পক্ষ থেকে আজ উত্তর দমদমে মিছিল বের করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও দমদমের তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের যোগ নেই। বৃদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী ছিলেন। অসুস্থতার জেরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।” সে কথা অবশ্য মানতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি উত্তর দমদম পুরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের নিমতা পাটনা স্কুল রোডের বাসিন্দা শোভা মজুমদারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। আক্রান্ত বৃদ্ধার ছেলে বিজেপি কর্মী গোপাল মজুমদারের অভিযোগ, তিনজন তৃণমূল কর্মী তাঁদের বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে। তাঁকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারধর করছিল। সেই সময়ই গোপালবাবুর মা অভিযুক্তদের বাধা দিতে এলে অশীতিপর বৃদ্ধা মাকেও বেধড়ক মারধর করে শাসকদলের ওই কর্মীরা। নাক-মুখ ফুলে রক্তজমাট বেঁধে লাল হয়ে যায় তাঁর। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে অসুস্থ বৃদ্ধা শোভা মজুমদার জানিয়েছিলেন, “তৃণমূলের লোকজন আমার ছেলেকে মারধর করেছে। আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়েছে। আমাকে খুব মেরেছে ওরা। এই অবস্থা দেখেও ওরা আমায় ছাড়েনি।”