shono
Advertisement

‘ভ্রূণ নয়, হরিদেবপুরের জমিতে ছিল বড়দের ডায়াপার’

সোডিয়াম অ্যাক্রিলেটের জন্যই রজ্জুতে সর্পভ্রম, দাবি ফরেনসিক রিপোর্টে। The post ‘ভ্রূণ নয়, হরিদেবপুরের জমিতে ছিল বড়দের ডায়াপার’ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:25 AM Sep 04, 2018Updated: 09:25 AM Sep 04, 2018

অর্ণব আইচ: অপরিণত মানবদেহ নয়। রজ্জুতে সর্পভ্রমের মূলে নিছকই একটি রাসায়নিক উপজাত পদার্থ। নাম, ‘সোডিয়াম অ্যাক্রিলেট।’ নিজ রসায়নের ধর্ম মেনেই যা কিনা ক্রমাগত বৃষ্টির জলে ভিজে ভিজে ফুলে ঢোল হয়েছিল। আর তাতেই যাবতীয় বিভ্রান্তির সূত্রপাত।

Advertisement

শেষমেশ ডায়াপারের মধ্যেই মিলল হরিদেবপুরের ‘ভ্রূণ রহস্যের’ সমাধানসূত্র। অন্তত লালবাজারের তেমনই দাবি। তদন্তকারীদের ব্যাখ্যা,  সোমবার ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়ে দিয়েছেন, হরিদেবপুরের ওই জমিতে  পড়ে থাকা প্যাকেটগুলি আসলে ব্যবহৃত ডায়াপার। তার শুকনো বরফের (ড্রাই আইস) মতো দেখতে জিনিসগুলি সোডিয়াম অ্যাক্রিলেট। শিশু বা বড়দের ডায়াপারের মূল উপাদান এই বস্তুটি অতি সহজে জল শুষতে পারে। এমনকী,  নিজের তুলনায় ১৫ গুণ ওজনের জল শুষে ফুলে-ফেঁপে উঠে লোকজনকে তাক লাগানোও তার পক্ষে বিচিত্র নয়।

পুলিশের দাবি, রবিবার সকালে হরিদেবপুরে সোডিয়াম অ্যাক্রিলেট সেই খেলই দেখিয়েছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, রাজা রামমোহন রায় রোডের ওই জমিতে পড়ে থাকা যে সব প্যাকেট দেখে মানবভ্রূণ বলে সন্দেহ জেগেছিল, সেগুলি নিরীহ ডায়াপার ছাড়া আর কিছু নয়। বিষয়টি ঘিরে দিনভর শহর তোলপাড় হয়। যদিও রবিবার সন্ধ্যাতেই এম আর বাঙুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, ব্যান্ডেজ বাঁধা ‘অপরিণত মানবশিশুর দেহ’ বলে যে ১৪টি প্যাকেট পাঠানো হয়েছে, সেগুলি পরীক্ষা করে মানুষ বা কোনও প্রাণীর টিসু পাওয়া যায়নি। ওগুলো মেডিক্যাল বা ক্লিনিকাল বর্জ্য বলেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ডাক্তাররা।

শহরে ফের ‘স্কিমার’ আতঙ্ক, লক্ষাধিক টাকা খোয়ালেন যুবক ]

সোমবার ফরেনসিকের কথায় ইঙ্গিতটাই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে লালবাজারের দাবি। পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, এদিন ফরেনসিকের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পরীক্ষার জন্য পাঠানো নমুনাগুলি আসলে বড়দের (অ্যাডাল্ট) ডায়াপার। জলে ভেজা। বেশ কিছুদিন ধরে বৃষ্টির জলে ভিজে ভিজে ফুলে উঠে পেল্লায় চেহারা নিয়েছিল। ঝোপঝাড়ে ভরা ঘেরা জমিতে সেগুলি পড়ে থাকতে দেখে সাধারণ মানুষ সন্দিগ্ধ হয়ে ওঠেন। তাঁরা মনে  করেছিলেন, সাদা গজের কাপড়ে বেঁধে মানুষের ভ্রূণ ফেলে গিয়েছে কেউ। “ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশও প্যাকেটগুলি খুলে দেখেনি। রক্ত লেগে থাকা জিনিসগুলো দেখে পুলিশও গোড়ায় তেমনই সন্দেহ করেছিল।”–এদিন বলেন এক অফিসার।

সহজে রহস্যের জট কাটায় পুলিশকর্তারাও হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন। বস্তুত লোকচক্ষুর আড়ালে ফাঁকা জমিতে  মানবভ্রূণ ফেলা হয়েছে- এহেন অভিযোগের গুরুত্ব যে কতটা, তা লালবাজারের আচরণেই স্পষ্ট। রবিবার খবর পাওয়ামাত্র খোদ পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার অকুস্থলে চলে গিয়েছিলেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। গোয়েন্দাকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেন। লালবাজারের দাবি, তদন্তে কোনও ফঁাক নেই। এদিকে, ডায়াপার তত্ত্ব সামনে আসার পর পুলিশের ধারণা, এটি হরিদেবপুরের রামমোহন রোড বা নীলাচল অঞ্চলের কোনও বাসিন্দার কীর্তি। কোনও অসুস্থ রোগী বা বৃদ্ধ অথবা বৃদ্ধার ব্যবহার করা ডায়াপার তাঁরই বাড়ির লোকেরা ছুড়ে ফেলেছে ৭২ কাঠার আগাছাভর্তি ফাঁকা জমিতে। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই জমিটি একটি প্রোমোটিং সংস্থার। এই ডায়াপার ফেলার সঙ্গে জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যার সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রমাণ মেলেনি। যদিও কারা এই ডায়াপারগুলি ফেললেন, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। কোনও নার্সিংহোম থেকে সেগুলি আনা হয়নি বলেই ধারণা পুলিশের। পুলিশ আধিকারিকদের মতে, এলাকার কোনও বাসিন্দার ব্যবহার করা বর্জ্যই জমিটির টিনের পাঁচিল টপকে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। যাঁরা এর পিছনে রয়েছেন, তাঁদের সন্ধান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অবৈধ পার্কিং নিয়ে বচসা, শহরে ফের আক্রান্ত পুলিশ ]

The post ‘ভ্রূণ নয়, হরিদেবপুরের জমিতে ছিল বড়দের ডায়াপার’ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement