অভিরূপ দাস: গোঁফের রেখা ওঠেনি এখনও। অনেকেই স্কুলের গণ্ডিটাও পেরোয়নি। ভক ভক করে তারাই ধোঁয়া টানছে হুক্কা বারে। অথচ নির্দিষ্ট আইন না থাকায় হাত পা বাধা প্রশাসনের। এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে হুক্কা বার নিষিদ্ধ করতে আইন আনতে চলেছে রাজ্য সরকার।
কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “নির্দিষ্ট আইন তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। তামাকজাত দ্রব্য নিয়ে যেমন আইন রয়েছে তেমনই হুক্কা নিয়েও নির্দিষ্ট আইন আনবে রাজ্য সরকার। তা না আনলে আগামী দিনে পাড়ার মোড়ে মোড়ে হুকা বার গজিয়ে উঠবে।” নতুন প্রজন্মের সুস্থতার জন্য হুকা বার বন্ধ করা উচিৎ। আগেও বলেছিলেন মেয়র। শুক্রবার ফিরহাদ হাকিম বুঝিয়ে দিয়েছেন, শহরে হুক্কা বার বন্ধের সিদ্ধান্তে অনড় কলকাতা পুরসভা।
[আরও পড়ুন: সিপিএমের বৈঠকে হাজির বিজেপি নেতা, রাম-বাম ‘আঁতাঁতে’ তুঙ্গে বিতর্ক]
উল্লেখ্য, আগেই হাই কোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চে হুক্কা বার বন্ধের আরজি নিয়ে মামলা দায়ের করা হয়। পরে সেই মামলা নিয়ে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে যায় পুরসভা। মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজশেখর মান্থা জানিয়েছেন, যে হেতু এনিয়ে রাজ্যের কোনও আইন নেই, তাই মহানগর এবং উপনগরী এলাকায় হুক্কা বার চলতে পারে। এর পরও যদি হুক্কা বার বন্ধ করতে হয়, তবে রাজ্য বা পুরসভাকে নতুন আইন প্রণয়ন করে তা বন্ধ করতে হবে। এর পরেই পুরসভায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, হুকা বার নিয়ে দ্রুত আইন আনবে রাজ্য সরকার।
শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো হুক্কা বার গজিয়ে উঠেছে। সন্ধ্যা নামলেই ভিড় জমতে শুরু করে সেই বারগুলিতে। অভিযোগ, এই নিয়ে নির্দিষ্ট আইন না থাকায় নাবালকরাও ভিড় করে এ ধরণের বারে। চিকিৎসকরা বলছেন, অন্যান্য তামাকাজাত দ্রব্যের চেয়েও হুক্কার ক্ষতি ঢের বেশি। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ডা. উৎসব দাস জানিয়েছেন, ফুসফুসের অসুখ তো বটেই হুক্কা থেকে হতে পারে মুখের ক্যানসারও। চিকিৎসকের কথায়, যে কেমিক্যাল পুড়ে গলগলে ধোঁয়া তৈরি হয় তাতে মিশে থাকে ক্ষতিকর পদার্থ। হুক্কার ধোঁয়া আদতে কার্বন মনোক্সাইড। সিগারেটের থেকে পাঁচগুণ বেশি ধোঁয়া হয় হুকায়। ক্ষতিও তাই ঢের বেশি। পুর নগরোন্নয়ন মন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন চিকিৎসককুল।