shono
Advertisement

প্যারিসে বসে উপহার পেয়েছিলেন বঙ্গের জামা, এবার সেই তাঁতশিল্প দেখতে কাটোয়ায় নোবেলজয়ী

অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরলেন তাঁতশিল্পীরা।
Posted: 08:59 AM Jan 18, 2023Updated: 09:07 AM Jan 18, 2023

ধীমান রায়, কাটোয়া: সুদূর ফ্রান্সে (France) একটি পোশাক প্রস্তুতকারী সংস্থার প্রদর্শনীতে তাঁকে একটি জামা উপহার দেওয়া হয়েছিল। জামাটিতে হাত রেখেই কাপড়ের নমনীয়তা, মোলায়েমের জন্য মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। তখনই তিনি জানতে পেরেছিলেন, তাঁর মন জয় করা সেই জামার কাপড় বিশ্বের আর কোথাও নয়, তৈরি হয় খাস বাংলার মাটিতেই। বাংলার কুটিরশিল্পীর হাতে তৈরি এই তাঁতের (Cotton) কাপড়। সেদিনই বাংলার তাঁতশিল্পীদের হাতের কাজ স্বচক্ষে দেখতে আসার পরিকল্পনা করেছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhijit Banerjee)। যেমন ভাবা, তেমন কাজ।

Advertisement

ছবি: জয়ন্ত দাস।

মঙ্গলবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম (Ketugram) থানার বেণীনগর গ্রামে আসেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনভর কাটালেন তাঁতশিল্পীদের হাতের কাজ দেখে। শুনলেন তাদের সুবিধা-সুবিধার কথা। মন জয় করলেন গ্রামের মানুষদের।অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বাংলার তাঁতের একটা ঐতিহ্য আছে। এই ঐতিহ্যকে কীভাবে সারা পৃথিবীর দরবারে নিয়ে যাওয়া যায়, সারা পৃথিবীর মানুষ যাতে জানতে পারেন যে এখানে কী ঐতিহ্য ছিল, কী ঐতিহ্য আছে, কী ধরনের নানারকম কারুকাজ এখানে হয়, সেসব জানানোর একটা প্রচেষ্টা করছি।”

[আরও পড়ুন: ব্যবধান ১ ভোটের! হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে আপকে হারিয়ে চণ্ডীগড়ে জয় বিজেপির মেয়র প্রার্থীর]

কেতুগ্রামের বেণীনগর গ্রামের তাঁতশিল্পের জন্য নাম রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে বংশ পরম্পরায় বেশকিছু পরিবার তাঁত বুনেই রোজগার করছেন। মঙ্গলবার সকালের দিকে এই গ্রামে পৌঁছে যান অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রখ্যাত ডিজাইনার সুকেট ধীর, চলচ্চিত্র নির্মাতা রাণু ঘোষ এবং ফরাসি অলংকর শিল্পী সেইন অলিভিয়া। চারজনের দলটি বেণীনগর গ্রামে তাঁতশিল্পীদের বাড়ি বাড়ি ঘোরেন। কীভাবে সুতো দিয়ে হাতের গুনে কাপড় তৈরি হচ্ছে, তা স্বচক্ষে দেখেন। হ্যান্ডলুমে ব্যবহৃত কাঠের যন্ত্রপাতিগুলি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন। পাশাপাশি তাঁতশিল্পীদের আয়, সুবিধা-অসুবিধার কথা তাঁদের মুখে শুনতে চান নোবেলজয়ী। জানা যায়, গত বছর নভেম্বর মাসেও একবার বেণীনগর গ্রামে ঘুরে গিয়েছিলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবার দল বেঁধেই এসেছেন। সঙ্গীরাও তাঁতশিল্পীদের হাতের কাজ দেখে মুগ্ধ।

[আরও পড়ুন: মাধ্যমিকের টেস্ট পেপারে ‘আজাদ কাশ্মীর’ নিয়ে প্রশ্ন! বিতর্কে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ]

বাংলার এই অখ্যাত গ্রামটির নাম কীভাবে জানতে পারলেন বিশ্বখ্যাত নোবেলজয়ী? বেণীনগর গ্রামের এক তাঁতশিল্পী তথা ব্যবসায়ী বাসুদেব সিনহা বলেন, “আমরা এখানকার তাঁতশিল্পীদের তৈরি কাপড় দিল্লির এক ডিজাইনারকে বিক্রি করি। সেই ডিজাইনার তাদের পোশাকের উপর প্যারিসে একটি প্রদর্শনী করেন। সেখানে অভিজিৎবাবুকে একটি জামা উপহার দেওয়া হয়েছিল। তখনই তিনি জেনেছিলেন, জামার কাপড় আমাদের গ্রামে তাঁতশিল্পীদের তৈরি। তখনই তিনি এখানে ঘুরে দেখে যেতে চেয়েছিলেন।” বেণীনগর গ্রামের তাঁতশিল্পী অশোক দত্ত, সঞ্জয় গড়াইদের কথায়, “আমরা মূলত হাতে বোনা তাঁতের কাপড় তৈরি করি। এখন পাওয়ারলুম অর্থাৎ মেশিনে বোনা কাপড় তৈরি হচ্ছে। এতে আমাদের রুজি-রোজগারের ক্ষতি হচ্ছে। আমরা সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা চাইছি। স্যারকে সব সমস্যার কথা বলেছি।”

তাঁতশিল্পীদের সঙ্গে কথা বলছেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: জয়ন্ত দাস।
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার