সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রত্যন্ত এলাকার পড়ুয়াদের শিক্ষাক্ষেত্রে আরও উন্নতির কথা ভেবে নয়া উদ্যোগ বাঁকুড়া জেলা পুলিশের। প্রাথমিক স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ের পর এবার খুদে পড়ুয়াদের পড়াশোনা শেখাবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এই ‘অঙ্কুর’ প্রকল্প নিয়ে জোর শোরগোল। কেন সিভিক ভলান্টিয়াররা প্রাথমিকের পড়ুয়াদের পড়াবেন, তা নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিরোধী বিজেপি ও সিপিএম। অহেতুক শোরগোল করছেন বিরোধীরা, পালটা দাবি তৃণমূলের।
সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে একটি সমীক্ষা করা হয়। ওই সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ৮০০টি স্কুলে পড়ুয়া তিরিশেরও কম। এই তথ্যই প্রমাণ করে দেয় জেলার শিক্ষার হাল ঠিক কেমন। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার হাল ফেরাতে ‘অঙ্কুর’ প্রকল্প নিয়েছে বাঁকুড়া জেলা পুলিশ। জঙ্গলমহল এলাকার পাঁচটি থানা এলাকার প্রতিটি অঞ্চলে একটি করে প্রাথমিক স্কুল এবং জেলার অন্যান্য থানা এলাকার প্রাথমিক স্কুলগুলিকে ‘অঙ্কুর’ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে। এই প্রকল্প অনুযায়ী দু’জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার স্কুলের নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের পড়াবেন। অর্থাৎ সিভিক ভলান্টিয়াররাই হয়ে উঠবেন পড়ুয়াদের ইংরাজি কিংবা অঙ্কের শিক্ষক।
[আরও পড়ুন: হু হু করে বেড়ে মুরগি ৩০০ টাকার দোরগোড়ায়, ছুটির দিনে পাতে মাংস থাকবে তো?]
বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ‘বাংলার লজ্জা’, বলে তোপ দেগেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। টুইটে ‘অঙ্কুর’ প্রকল্পের বিরোধিতায় সরব হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লেখেন, “মাধ্যমিকে ৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী কমে গিয়েছে। রাজ্যের ৮ হাজার ২০৭টি স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তিরিশেরও কম। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এবার থেকে অতিরিক্ত ক্লাস নেবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। রাজ্য সরকার সরকারি শিক্ষাব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে চাইছে।”
প্রায় একই সুর সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও। শিক্ষাব্যবস্থাকে রাজ্য সরকার কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে বলেই খোঁচা তাঁর। যদিও সমালোচকদের পালটা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। ক্ষমতায় থাকাকালীন বামেরা রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, অভিযোগ তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে বলেই জানান তিনি। বাঁকুড়া জেলা পুলিশ রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়া এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। যতক্ষণ না আলোচনা করে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ততক্ষণ ‘অঙ্কুর’ প্রকল্প চালু হবে না বলেই জানান।