নব্যেন্দু হাজরা: ব্যস্ত মহানগরের মাথার উপর দিয়ে ঝুলতে ঝুলতে দেড় কিলোমিটার যাত্রা! পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনে নতুন মাত্রা নিয়ে আসছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) রোপওয়ে। স্বামীনারায়ণ মন্দির থেকে ভাসা পর্যন্ত আকাশপথেই যাতায়াত করতে পারবেন আগ্রহী মানুষজন। এমনই ব্যবস্থা করতে চলেছে রাজ্যের পর্যটন দপ্তর (Tourism Department)।
বাছাই কিছু বিনোদন পার্ক ছাড়া জনপদের উপর দিয়ে মানুষ বহনের রোপওয়ে (Ropeway) পশ্চিমবঙ্গের কোথাও নেই। আপাতত ‘জয় রাইড’ হিসাবে হলেও পরে গণপরিবহণের অঙ্গ হিসাবেই এই মহানগরে রোপওয়ে চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে পরিবহণ দপ্তর। প্রথম ধাপে বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) স্বামীনারায়ণ মন্দির থেকে ভাসা পর্যন্ত তা চালু হবে পাইলট প্রোজেক্ট হিসাবে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার পরিবহণ দপ্তরে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, পরিবহণসচিব বিনোদ কুমার, দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী দিলীপ মণ্ডল তাঁর আপ্তসহায়ক অরূপকুমার দাস-সহ অন্য আধিকারিকরা। এছাড়া যে সংস্থা এই রোপওয়ে তৈরির কাজ করবে, তাদের কর্তারাও এই বৈঠকে ছিলেন। প্রাথমিক ধাপে ওই দেড় কিলোমিটারে রোপওয়ে চালু হলেও ভবিষ্যতে আমতলা-বাঁকড়াহাট এবং জোকা-শিরাকোল রুটেও রোপওয়ে চালু করা হবে। আমতলা-বাঁকড়াহাট রুটে প্রাথমিকভাবে সাতটি স্টেশন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘লাদেনকে অতিথি করেছিলেন’, রাষ্ট্রসংঘে পাকিস্তানকে তুলোধোনা জয়শংকরের]
দার্জিলিংয়ে আছে, গ্যাংটকে আছে। আছে কাশ্মীরেও। কিন্তু শহরের ধারেকাছে রোপওয়ের স্বাদ সেভাবে পাননি সাধারণ মানুষ। কোনও কোনও পার্কে জয় রাইড ছিল একসময়। পরিবহণ দপ্তর সূত্রে খবর, যে এলাকার উপর দিয়ে রোপওয়ে তৈরি হবে, সেখানকার জমি ওই সংস্থা নিজেরাই তার মালিকদের থেকে কিনবে, না কি সরকার নিয়ে তাঁদের দেবে তা এখনও ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে কথাবার্তা দ্রুত শুরু হবে। আমতলার কাছাকাছি এই রোপওয়ে তৈরির পর তা কলকাতায় চালু করারও পরিকল্পনা রয়েছে বলে খবর। সেক্ষেত্রে ট্রামলাইন ধরে তা তৈরি হতে পারে। গঙ্গা পারাপার করতেও তা চালানো যায় কি না সে কথাও এই বৈঠকে উঠেছে বলে খবর। সেক্ষেত্রে দ্রুত এক স্থান থেকে অন্যত্র যেতে রোপওয়ে গণপরিবহণের অঙ্গ হয়ে উঠবে বলেই ধারণা দপ্তরের কর্তাদের।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরের নিরাপত্তায় বিপুল খরচ, কত হাজার কোটি টাকা ব্যয়? কমল নাশকতা? জানাল কেন্দ্র]
রোপওয়ে স্টেশন বানাতে খুব বেশি জায়গার প্রয়োজন হয় না। প্রতিটি কেবল কারে আট থেকে দশজন করে যাত্রী বসতে পারবেন। রোপওয়ের স্টেশনের উপরে পৌঁছতে লিফটের ব্যবস্থা থাকবে। কলকাতাতেও যদি রোপওয়ে চালু হয়, সেক্ষেত্রে দূষণ কমিয়ে শহরে গণপরিবহণে একটা নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলা যায়। এর আগেও একাধিকবার এই রোপওয়ে চালুর পরিকল্পনা হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এবার আলোচনার গতিপ্রকৃতি বলছে প্রথম ধাপে দেড় কিলোমিটার অংশে রোপওয়ের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকেই এগোচ্ছে।