সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ প্রস্তাব। সব ঠিক থাকলে সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই পেশ হবে এক দেশ-এক নির্বাচন বিল। কিন্তু লোকসভায় পেশ হলেও সেটা পাশ হওয়া নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার আর আগের মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। জোটসঙ্গীদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে। আবার সঙ্গীদের অনেকেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে পারে।
এক দেশ এক নির্বাচন প্রক্রিয়া কার্যকর করার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে যে কমিটি গড়েছে মোদি সরকার, সেই কমিটির সুপারিশ বলছে, এক দেশ-এক নির্বাচন কার্যকর করতে হলে বেশ কয়েকটি সংবিধান সংশোধনী আনতে হবে। সংবিধানের ৩৬৮(২) ধারা অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনীর জন্য সংসদের দুই কক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়। প্রশ্ন হল, মোদি সরকারের কাছে সেই সংখ্যা আছে কি?
কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটি মোট ৪৭টি রাজনৈতিক দলের কাছে এক দেশ-এক নির্বাচন সম্পর্কে নিজেদের মতামত দিয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি দল এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছে। আর ১৫টি রাজনৈতিক দল এর বিপক্ষে মত দিয়েছে। এনডিএর জোটসঙ্গী টিডিপি-সহ কয়েকটি দল কোনওপক্ষে মতামত দেয়নি। যারা প্রস্তাবের পক্ষে মতামত দিয়েছে তারা অধিকাংশই এনডিএর জোটসঙ্গী। সঙ্গে রয়েছে ওড়িশার প্রধান বিরোধী দল বিজেডি। যারা এই প্রস্তাবের বিপক্ষে মত দিয়েছে তারা অধিকাংশই কংগ্রেসের জোটসঙ্গী বা ইন্ডিয়া জোটের সঙ্গী।
যে যে দল এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছে, তাদের সব ভোট যোগ করলে লোকসভায় সাংসদ সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭১। যারা যারা কোনও পক্ষে মত দেয়নি তাঁদের সাংসদসংখ্যাও যদি যোগ করা হয়, তাহলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২৯৩। লোকসভার সব সাংসদ উপস্থিত থাকলে সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রয়জন হয় ৩৬২ জন সাংসদের সমর্থন। ২৯৩ জন সাংসদের সমর্থনে এই প্রস্তাব পাশ করাতে হলে লোকসভায় সাংসদের উপস্থিতি কমিয়ে আনতে হবে ৪৩৯ জনে। অর্থাৎ শতাধিক সাংসদকে ভোটদানে বিরত থাকতে হবে। আর নাহয় বিরোধী শিবিরের কোনও দলকে সরকারের পক্ষে ভেড়াতে হবে। রাজ্যসভাতেও পরিস্থিতি একই। রাজ্যসভায় এই সংবিধান সংশোধনী পাশ করাতে হলে সরকারের প্রয়োজন ১৬৪ জন সাংসদের সমর্থন। এনডিএর হাতে এই মুহূর্তে আছে মাত্র ১১৫ জন সাংসদের সমর্থন। এখন দেখার সরকার ঘুরপথে সাংবিধানিক সংশোধনী এড়িয়ে বিলটি পাশ করাতে পারে কিনা।