অংশুপ্রতীম পাল, খড়গপুর: শুরু হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের পথচলা। ট্রেন চালু হওয়ার প্রথম দিন সরকারি আধিকারিক থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি-সহ সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু এই আমন্ত্রণের ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ। বিশেষ করে খড়গপুর পুরসভার রেল ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের মধ্যে অধিকাংশকে আমন্ত্রণ করা হয়নি বলেই অভিযোগ। তবে তার মধ্যে পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলরদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ক্ষোভ তৈরি হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ অন্যান্য দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে। অভিযোগ উঠেছে রেলের অনুষ্ঠান বলে বেছে বেছে বিজেপি কাউন্সিলরদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের সাফাই খড়গপুরের পুরপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কোনও বৈষম্য করা হয়নি।
[আরও পড়ুন: দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে কর্ণাটকের মসনদে সিদ্দারামাইয়া, শপথগ্রহণে আমন্ত্রণ মমতাকে]
তবে রেল কর্তৃপক্ষ যাই বলুক না কেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনে সফর করার আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খড়গপুর পুরসভার রেল ওয়ার্ডের অধিকাংশ কাউন্সিলর। এই ব্যাপারে খড়গপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিষ্ণু বাহাদুর কামি বললেন, “আমি রেল ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর। তাছাড়া পুরসভার বিরোধী দলনেতা। আমাকে কোনও আমন্ত্রণ রেল কর্তৃপক্ষ জানায়নি। অথচ শুনেছি বিজেপির কাউন্সিলরদের ডাকা হয়েছে। এটা ঠিক হয়নি। কারণ, রেল কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নিজস্ব সম্পত্তি নয়। সবাইকে ডাকা উচিত ছিল।” পুরসভার রেল এলাকার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ডি বাসন্তী বলেছেন, “আমাকে রেলের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কিছু বলার নেই। রেল কর্তৃপক্ষ সরকারি একটি কর্মসূচিকে একটি দলের কর্মসূচিতে পরিণত করেছে।”
এদিকে, রেল কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণ পেয়ে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত ও আবেগতাড়িত পুরসভার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভার বিজেপির পরিষদীয় দলনেতা অনুশ্রী বেহেরা বললেন, “রেলের পক্ষ থেকে আমাকে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়েছে। আমি খুবই খুশি।” তবে পুরপ্রধানকে এই আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে কিনা তিনি জানেন না বলে জানালেন। এই ওয়ার্ডটি রেল এলাকার মধ্যে। যদিও পুরপ্রধান কল্যাণী ঘোষ বলেন, “আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে বুঝতে পারলাম না আমন্ত্রণ পত্রে সকাল সাড়ে নটা কেন উল্লেখ করা হয়েছে। যতদূর জানি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন খড়গপুর স্টেশনে রাত আটটায় পৌঁছনোর কথা। আর এই বিভ্রান্তির কারণে যাওয়া হয়নি।”
এদিকে রেল এলাকার অধীন খড়গপুর পুরসভার ১৫ ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুই তৃণমূল কাউন্সিলর বানতা মুরলী ও রোহন দাস রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “জানি না কেন আমাদের ডাকা হয় নি। এটা তো রেলের অনুষ্ঠান। আমরা যারা রেল ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাঁদের তো অন্তত আমন্ত্রণ করতে পারত। মনে হয় আমরা বিজেপি বিরোধী দলের কাউন্সিলর বলে হয়ত ডাকা হয়নি।” তবে রেলের খড়গপুর ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম তথা জনসংযোগ আধিকারিক রাজেশ কুমার বলেন, “খড়গপুরের পুরপ্রধানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি ঠিক করবেন কাদের নিয়ে তিনি সফরে যাবেন। কোনও বৈষম্য করা হয়নি।” এদিকে, এই আমন্ত্রণ শহরের বিজেপির তারকা বিধায়ক হিরণকে করা হলেও তিনি সফরে থাকবেন কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যায় নি। তবে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ এইদিন সন্ধে সাড়ে ছটায় ওড়িশার বালেশ্বর থেকে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন সফরে অংশগ্রহণ করেন। যদিও তাঁর খড়গপুর স্টেশন থেকে এই ট্রেনে ওঠার কর্মসূচি ছিল।